একজন যখন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে তার ক্যারিয়ার শুরু করতে যায় তখনই তার মাথায় চলে আসে ক্লায়েন্ট কিভাবে পাওয়া যেতে পারে। শুরুতে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়া বেশ কঠিন। আপনি ক্লায়েন্ট যতক্ষন না পাচ্ছেন ততক্ষন কিন্তু একটি টেনশন আপনার মাথায় রয়েই যায়। বিভিন্ন পেইড ওয়েবসাইট ফ্রিল্যান্সারদের রেগুলার কাজের সুযোগ করে দেবে বললেও বাস্তবে তেমনটা হয়না।

এই ব্লগে আমি ফ্রিল্যান্সার হিসাবে ক্লায়েন্ট পাওয়ার দশটি টিপস দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আসুন দেখে নেওয়া যাক কিছু সহজ স্ট্র্যাটেজি ফলো করে কীভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ক্লায়েন্ট থেকে কাজ খুঁজে নেওয়া সম্ভব।

  • রেফারেল
    • ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য রেফারেল একটি অনেক পুরানো আইডিয়া।
    • পুরনো ক্লায়েন্টের থেকে রেফারেল এর মাধ্যমে কাজ পাওয়ার অনেক সহজ।
    • অনেকেই এই আইডিয়া মাথায় রেখেছি কাজ করে যাচ্ছে এবং যার যার ফিল্ডে অনেক ভালো করছে।
    • ফ্রিল্যান্সার খোঁজার দীর্ঘ প্রসেস এড়াতে বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট তাঁদের পরিচিত মহলের রেকমেন্ডেশানের ওপর নির্ভর করেন।
    • তাই আপনার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে বর্তমান, পুরনো ক্লায়েন্টদের কাছে তাদে আপকামিং প্রজেক্টের জন্য আপনাকে রেফার করার বিষয়টি জানিয়ে রাখতে পারেন।
  • মার্কেটিং ব্লগ পাবলিশ
    • মার্কেটিং ব্লগ পাবলিশ ক্লায়েন্ট পাওয়ার একটি দুর্দান্ত উপায়।
    • মার্কেটিং অবজেক্টিভ নিয়ে ব্লগ লিখে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং ক্লায়েন্ট জিতে নিতে পারেন অনেক সহজেই।
    • ওয়ার্ডপ্রেস, ব্লগার, মিডিআম, হেক্সো ইত্যাদি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিনামূল্যে এই কাজ শুরু করা যেতে পারে।
    • আপনি দৈনিক একটি ব্লগ পাবলিশ পাবলিশ করার চেষ্টা করুন। দেখবেন এক সময় আপনার উক্তি বড় এসেট হয়ে গেছে।
  • গেস্ট পোস্টিং
    • গেস্ট পোস্টিং ক্লায়েন্ট অর্জন করার আরেকটি উপায় হতে পারে।
    • বিভিন্ন অনলাইন টেকনোলজি বা বিজনেস-ওরিয়েন্টেড ওয়েবসাইটে নিজস্ব ক্রিয়েটিভ ভাবনা প্রকাশ করলে শুধু আপনার পরিচিতি বাড়বে তাই নয় কাজ পাওয়ার চান্সও একলাফে অনেকখানি বেড়ে যাবে।
    • এমন কয়েকটি ওয়েবসাইট হলঃ
      • অ্যান্সারআউট.কম – ফ্রিল্যান্স এসইও ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য খুবই এফেকটিভ।
      • হাবস্পট ব্লগ – নিজের স্কিলের জেনারেল মার্কেটিং-এর জন্য
      • গেট রেসপন্স ব্লগ – ইমেইল মার্কেটিং ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য এফেকটিভ হতে পারে।
  • পোর্ট-ফোলিও
    • নতুন নতুন ক্লায়েন্ট অর্জন করার জন্য পোর্ট-ফোলিও এর উপকারিতা বলে সাহস করা যাবে না।
    • সর্বদা ওয়েবসাইট, ভিডিও, পিডিএফের মতো বিভিন্ন ফরম্যাটে কভার লেটার, রিজিউমি ও আপডেটেড পোর্ট-ফোলিও মেইনটেইন করার চেষ্টা করুন।
    • পোর্ট-ফোলিওটি সার্চেবেল পোর্ট-ফোলিও প্ল্যাটফর্মে আপলোড করতে ভুলবেন না যাতে কোন ক্লায়েন্ট স্পেসিফিক স্কিল দিয়ে সার্চ করলে আপনার পোর্ট-ফোলিওটি শো করে।
    • আপনার একটি পোর্ট-ফোলিও আপনাকে অনেকগুলি ক্লায়েন্ট এনে দিতে সক্ষম।
  • লিঙ্কডিন নেটওয়ার্কিং
    • নিত্য নিতুন ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য লিঙ্কডিন নেটওয়ার্কিং এর কথা বলে শেষ করা যাবে না।
    • আপনি এখানে যত বেশি অন্যের সাথে নেটওয়ার্কিং করতে পারবেন তত বেশী ক্লায়েন্ট আপনার হাতে ধরা দিবে।
    • বড়, মাঝারি বিজনেসের ম্যানেজার ও রিক্রুটাররা হায়ারিং-এর জন্য লিঙ্কডিন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে থাকেন।
    • সুতরাং, যত্ন নিয়ে ও প্রফেশানাল কায়দায় নিজের লিঙ্কডিন প্রোফাইলটি সাজান। দরকার হলে একজন এক্সপার্টের হেল্প নিন।
  • সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার
    • সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার আপনার রিচ অনেক অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে।
    • বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্রেজেন্স যার বেশি তার সফল হওয়ার পার্সেন্টেজ বেশী।
    • আপনি আপনার বিজনেস এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ঠিক মতো ব্যবহার করে বাজিমাত করতে পারেন।
    • অ্যাকটিভ ইন্টারঅ্যাকশান, পোর্ট-ফোলিও শেয়ার করে ক্লায়েন্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করুন।
  • মার্কেটিং ইমেইল ও নিউজলেটার
    • সঠিক মার্কেটিং ইমেইল ও নিউজলেটার এর ব্যবহার ক্লায়েন্ট পাওয়ার আরেকটি অসাধারণ মাধ্যম হতে পারে।
    • মুসেন্ড, মেইলচিম্প, সেন্ডিনব্লুয়ের মতো ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ইমেইল ও নিউজলেটার মার্কেটিং-এ জোর দিতে পারেন।
    • আপনি আপনার অডিয়েন্সকে ইফেক্টিভ কিছু ইমেইল ও নিউজলেটার পাঠানা যাতে তারা খুবই উপকৃত হয়।
    • তারা যদি আপনার কাছ থেকে ভেল্যু পেয়ে থাকে তাইলে একটা সময় তারা আপনার গ্রহবকে রূপান্তরিত হবে এইটাই স্বাভাবিক।
  • সেলস পিচ
    • একটি পারফেক্ট সেলস পিচ আপনার ফ্রিল্যান্স বিজনেসের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
    • ক্লায়েন্টের জন্য বিশদ এবং বিশ্বাসযোগ্য সেলস পিচ তৈরি করার চেষ্টা করুন।
    • আজকাল বিভিন্ন ওয়েবসাইট এ আপনি বিনামূল্যে সেলস পিচ ফরমেট পেতে পারেন।
    • এই ফরমেট একটু স্টাডি করে নিজেই বানিয়ে ফেলুন অসাধারণ সেলস পিচ।
  • ফোন ও টেক্সট মার্কেটিং
    • আপনি নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য ফোন ও টেক্সট মার্কেটিং স্ট্রাটেজি ফলো করতে পারেন।
    • যদিও এই স্ট্রাটেজি এখন একটু অবসোলিট হয়ে গেছে তারপর ও আপনি ট্রাই করতে পারেন।
    • যেহেতু ফোন এবং টেক্সট মার্কেটিং-এর সাহায্যে আপনি ক্লায়েন্ট পেতে পারেন তাইলে এই সুযোগ ও কাজে লাগান।
    • বহুল প্রচলিত এই স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করে সেলস পিচ পাঠিয়ে সহজে ক্লায়েন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।
  • এক্সপার্ট হিসাবে উপস্থাপন
    • নুতুন ক্লায়েন্ট পাওয়ার জন্য এক্সপার্ট হিসাবে উপস্থাপন আপনার প্রফেশনালিজমের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে।
    • আপনি যতই প্রফেশনাল হবেন ততই আপনি আপনার কাজে অগ্রগতি দেখতে পাবেন।
    • রিক্রুটাররা সবসময় একজন এক্সপার্ট ফ্রিল্যান্সার হায়ার করতে চাইবেন এটাই স্বাভাবিক।
    • সুতরাং, কাজ পেতে গেলে নিজেকে এক্সপার্ট হিসাবে উপস্থাপন করুন।
    • বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ফ্রিতে ই-বুক পাবলিশ করে, অনলাইন কোর্স কন্ডাক্ট করে অথবা ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেসের মাধ্যমে আপনি নিজেকে এক্সপার্ট হিসাবে তুলে ধরতে পারেন।

ক্লায়েন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করার স্ট্রাটেজি সময়ের সঙ্গে পাল্টায়। আপনাকে সঠিক সময়ে সঠিক স্ট্রাটেজি ফলো করতে হবে। উপরের এই সহজ দশটি উপায় আপনাকে রেগুলার কাজ পেতে অনেক এগিয়ে রাখবে টা বলাইবাহুল্য।