আপনি যদি অনলাইনে অর্থ উপার্জনের বৈধ উপায়গুলো জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে এই আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগতম। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আপনাকে আমি সৎ পথে অনলাইনে ক্যারিয়ার গঠনের সঠিক পথটি দেখাব।
অনলাইন উপার্জনের উপর অনেক দামি কোর্সও ইন্টারনেটে আপনি খুঁজে পাবেন। কিন্তু এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি ফ্রিতেই জেনে নিতে পারেন অনলাইন উপার্জনের এ-টু-জেড। তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
১। নিস ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরী করুন আর শুরু করে দিন এফিলিয়েট মার্কেটিং
অনলাইনে আয় শুরু করতে একটি অন্যতম জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে নিস ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরী। আপনার যদি কোনো নিসে আগ্রহ থেকে থাকে, আর দেরি না করে আজই কাজে লেগে পড়ুন। শুরুতে যদিও ব্লগিং শুরু করা, ওয়েবসাইট বানানো এসব আপনার জটিল মনে হতে পারে কিন্তু একবার সাহস করে শুরু করতে পারলে দেখতে দেখতেই এর থেকে আপনি উপার্জনের রাস্তা খুঁজে পাবেন।
আজকাল অনেক কম খরচেই ওয়েবহোস্টিং করে ওয়েবসাইট তৈরী করা যায়। তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই। কিছুদিন বিষয়টি নিয়ে রিসার্চ করুন। অল্প খরচেই তৈরী করে নিন আপনার প্রথম ব্লগিং সাইট।
এরপর আসছে কোন বিষয়ে আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্টগুলো তৈরী করতে যাচ্ছেন। আপনার যেই বিষয়গুলোতে আগ্রহ সেগুলো নিয়ে ব্রেইনস্টরমিং করুন। খুঁজে নিন কোন কন্টেন্টে লিখে আপনি সবচে সুন্দর ব্লগটি তৈরী করতে পারবেন।
আপনার পছন্দের নিসটি খুঁজে বের করে ওয়েবসাইটটি খুলে ফেলুন। এরপরের কাজটি হচ্ছে আপনি কি ধরনের প্রোডাক্ট মার্কেটিং করবেন, কোন কোম্পানীর এফিলিয়েট হবেন তা ঠিক করা। আজকালকার দিনে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে স্বাবলম্বী হওয়া অনলাইনে ক্যারিয়ার গঠনের একটি অনন্য উপায়। আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে এখনো না জেনে থাকেন, আমি আপনাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলছি। এটি হল প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর একটি প্রক্রিয়া, আপনি অন্য কোনো কোম্পানীর প্রোডাক্ট বিক্রি করবেন এবং সে অনুযায়ী কমিশন পাবেন। আপনার নিস ওয়েবসাইট থেকে আপনি সেসকল কোম্পানির লিংকে ট্র্যাফিক পাঠাবেন, তাহলে আপনাকে বলা হবে সেই সব কোম্পানীর এফিলিয়েট।
আপনি পছন্দসই নিসটি খুঁজে বের করার পর ঠিক করুন এই নিসে কোন কোম্পানীগুলো তাদের এফিলিয়েটদের কমিশন দিয়ে থাকে। এজন্য নিচের অপশনগুলো দেখে নিতে পারেনঃ
- আমাজন এফিলিয়েটস:
- Amazon Affiliates একটি দারুণ অপশন। সেখানে কী-ওয়ার্ড প্ল্যানার দিয়ে একটি প্রফিটেবল নিস খুঁজে নিন। আমাজন এফিলিয়েটসে আপনি অসংখ্য প্রোডাক্টের অপশন পাবেন আর প্রতিটি সেলেই পাচ্ছেন ১০% কমিশন। তাই বুঝতেই পারছেন, বিগিনারদের জন্য আমাজন এফিলিয়েটস একটি দারুণ সুযোগ।
- আমাজন এফিলিয়েটসে আপনার পছন্দের প্রোডাক্ট খুঁজে নেওয়ার পর আপনার কাজ হচ্ছে গুগল কী-ওয়ার্ড প্ল্যানার থেকে কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করা এবং কত মানুষ এই কী-ওয়ার্ড সার্চ করছে তা খুঁজে দেখা।
- মনে রাখবেন একজন এফিলিয়েট হিসেবে যত বেশি ট্র্যাফিক আপনি জেনারেট করবেন আপনার প্রফিট ততই বেশি হবে। তাই কী-ওয়ার্ড রিসার্চ গুরুত্ব সহকারে করবেন।
- এফিলিয়েট নেটওয়ার্কে সাইন-আপ:
- একটি জনপ্রিয় এফিলিয়েট নেটওয়ার্কে সাইন-আপ করে ফেলুন। আমাজন এফিলিয়েটস ছাড়াও অসংখ্য এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক রয়েছে যেখানে ব্লগাররা সাইন-আপ করে থাকেন।
- যেমনঃ Share-A-Sale, Clickbank, Skimlinks ইত্যাদি। এই নেটওয়ার্কগুলোর কাজ হচ্ছে এফিলিয়েট এবং মার্চেন্টদের মধ্যে মধ্যস্ততা করা। এজন্য তারাও সামান্য কিছু কমিশন রেখে থাকে।
- নিসের কোম্পানীগুলোকে খুঁজে বের করুন:
- আপনি যে নিস নিয়ে কাজ করছেন সে নিসের কোম্পানীগুলোকে খুঁজে বের করুন। যদি সেই কোম্পানিগুলো সরাসরি এফিলিয়েট নিয়োগ দিয়ে থাকে, তাহলে আপনাকে আর আমাজন এফিলিয়েটস বা অন্য কোনো নেটওয়ার্কের সহায়তা নিতে হচ্ছে না। অর্থাৎ সম্পূর্ণ কমিশনটিই আপনি পাচ্ছেন।
এখন যেহেতু আপনি নিস পছন্দ করা আর এফিলিয়েট নেটোয়ার্কের সাইন-আপ করার কাজটি বুঝে গেছেন, এবার সফল ভাবে ব্লগ তৈরী আর দারুণ সব ব্লগ পোস্ট লিখার উপায় শিখে নিন। প্রথমে আপনার ব্লগের জন্য সুন্দর একটি নাম আর ডোমেইন বেছে নিন। এক্ষেত্রে Bluehost, Dreamhost, Namecheap এসব ওয়েবহোস্টের সাহায্য নিতে পারেন। ডোমেইন নেইম পাওয়ার অর্থ হল আপনার এখন নিজের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরী হল, এবার ওয়েবসাইটটির সেট-আপ করার পালা। এজন্য আপনি Tumblr, Blogger, WordPress.com এধরনের ওয়েবসাইট বিল্ডারের সাহায্য নিতে পারেন, এগুলো সম্পূর্ণ ফ্রি। তবে যদি সেলফ হোস্টিং করতে চান, সেটাও করা সম্ভব।
ব্লগটি তৈরী করার পর এবার কন্টেন্টের উপর নজর দিন, যাতে আপনার অডিয়েন্সরা আকৃষ্ট হয় । কন্টেন্ট অবশ্যই যথাসম্ভব SEO অপটিমাইজড করার চেষ্টা করবেন, এতে করা পরবর্তীতে আপনার ব্লগ গুগলে সামনের পেইজে আসতে সুবিধা হবে।
একটি উদাহরণ সহকারে বুঝিয়ে বলি, ধরুন আপনি আমাজন এফিলিয়েটস থেকে একটি ক্যাম্পিং গিয়ারের মার্কেটিং করতে চান। এখন প্রথমেই আপনার কাজ হল এই বিষয়ে একটা কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করা। এ বিষয়ে কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে গেলে দেখলেন শুধুমাত্র “হাইকিং ব্যাকপ্যাক” এই কী-ওয়ার্ডটিতেই ৫৫০০ এর বেশি্ সার্চ ভলিউম রয়েছে প্রতি মাসে। তাহলে আপনি এমন একটি তথ্যবহুল আর্টিকেল লিখুন যাতে এই কী-ওয়ার্ডটি বারবার আসে আবার পাঠকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবও সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা হয়। এতে করে এ সংক্রান্ত অন্য ব্লগগুলোও আপনার আর্টিকেলটিকে ব্যাকলিংক হিসেবে ব্যবহার করতে চাবে। এটি অর্গানিক সার্চের ক্ষেত্রে আপনার ব্লগটিকে আগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।
এইভাবে যদি আপনার আর্টিকেলটি বারবার প্রথম পেইজে আসে তাহলে পাঠকরা আপনার লিংক থেকে ব্যাকপ্যাকটি কেনার সম্ভাবনাও বেড়ে যাচ্ছে। যদিও এভাবে এফিলিয়েট লিংক থেকে প্রোডাক্ট বিক্রি হওয়া একটি সময় সাধ্য ব্যাপার, তবুও আপনি যদি নিয়মিত কাজ করতে থাকেন তাহলে আয় করা শুরু করতে আপনার খুব বেশি সময় লাগবে না।
২। একটি ই-কমার্স সাইট খুলে প্রোডাক্ট বিক্রি করুনঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং যদি আপনার কাছে খুব একটা পছন্দসই না হয়, তাহলে নিজের একটা ই-কমার্স সাইট খুলে নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আজকালকার দিনে ভার্চুয়াল শপ খুলে অনলাইন ব্যবসা শুরু করা খুবই সহজ। আপনি চাইলে Shopify (একটি ই-কমার্স সাইট তৈরির প্লাটফর্ম) দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই একটি সাইট খুলে প্রোডাক্ট বিক্রি করা শুরু করতে পারেন।এজন্যও অবশ্য আপনার কিছু ব্লগিং স্কিল প্রয়োজন যাতে আপনি দারুণ সব প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লিখে কাস্টোমারদের মন জয় করতে পারেন। তবে অনলাইন এড গুলো দিয়েও চাইলে আপনার ব্যবসাকে গতিশীল রাখতে পারেন।
প্রকৃতপক্ষে অনলাইন ব্যবসাই অনলাইন আয়ের সবচে বেশি পরীক্ষিত আর লাভজনক মাধ্যম। আর এভাবে ব্যবসাসফল হয়েছেন এমন অনেক উদ্যোক্তাও আমাদের দেশেই রয়েছেন।
অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে দুই ধরনের আইডিয়া কাজে লাগাতে পারেন। একটি হল বাইরের কোনো দেশ থেকে বা লোকাল মার্কেট থেকে প্রোডাক্ট এনে অনলাইনে বিক্রি করা, অপরটি হল নিজেই পণ্য ম্যানুফেকচার করা। তবে দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে রিস্ক অনেক বেশি।
এবার অনলাইন স্টোরের খুঁটিনাটি আলোচনায় যাওয়া যাক।
আপনি নিজে ম্যানুফেকচার করুন বা বাইরে থেকে কিনে তা রিসেল করুন, আপনাকে কিছু জিনিস আগেই হিসাব করে রাখতে হবে। যেমন, আপনি কতটুক স্টোর করবেন, কত দামে কিনবেন, কতটুকু ইনভেন্টরিতে রাখবেন ইত্যাদি। যদিও অনলাইন ব্যবসায় আপনার স্টোর ভাড়া বেঁচে যাচ্ছে কিন্তু ইনভেন্টরির টাকাটা কিন্তু খরচ হবেই। তবে আপনি Drop shipping মেথড ব্যবহার করলে এই খরচটাও বেঁচে যাবে। এক্ষেত্রে আপনি অর্ডার পেলে ডিরেক্ট ম্যানুফেকচারার থেকে প্রোডাক্ট নিয়ে বিক্রি করবেন। আপনার আর কোনো আলাদা ইনভেন্টরি ভাড়া করা লাগবে না।
আপনি যদি আপনার শপিফাই এর স্টোর থেকে প্রোডাক্ট অন্য কোনো মারকেটপ্লেসে বিক্রি করতে চান, সেটাও সম্ভব। সেক্ষেত্রে নিচের অপশনগুলো মাথায় রাখুনঃ
- Amazon: এক্ষেত্রে ড্রপশিপিং এর প্রয়োজন নেই। আমাজনের ইনভেনটরিতে আপনার প্রোডাক্ট গুলো চাইলে রাখতে পারেন।
- Etsy: হাতের কাজ আর ক্র্যাফট বিক্রির জন্য Etsy একটি অসাধারণ মার্কেটপ্লেস।
- Ebay: ইলেকট্রনিকস, গ্যাজেট, জামাকাপড় এবং বিভিন্ন এক্সেসরির জন্য পারফেক্ট একটা মার্কেটপ্লেস হল Ebay।
- Craigslist: স্বল্প দাম ও কম সময়ে কেনাকাটার জন্য লোকাল বিজনেসের ক্ষেত্রে Craiglist বেশি কার্যকর।
প্রোডাক্ট লিস্টিং, আকর্ষণীয় ক্যাপশন আর ডেসক্রিপশন আপনার কাস্টোমারদের আগ্রহী করে তুলতে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। এছাড়া আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল প্রোডাক্টের ছবি। ভালো কোয়ালিটির ছবি আপনার বিক্রি বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এ বিষয়ে আলাদা নজর দিন।
৩। ফ্রিল্যান্স সার্ভিস প্রোভাইড করুনঃ
আপনার যদি রাইটিং, ডিজাইং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মার্কেটিং বা অন্য কোনো স্কিল থাকে তাহলে দেরি না করে আজকে থেকেই শুরু করে দিন ফ্রিল্যান্সিং। যদিও ফ্রিল্যান্সিং এ অন্য ব্যবসার মতো খুব দ্রুত টাকা কামানো সম্ভব না। কিন্তু যদি আপনি একা কোনো সফল ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে শুরু করে দিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং করে সফল হওয়ার অসংখ্য সুযোগ রয়েছে। এমনকি আজকাল অনেকে প্রথাগত চাকুরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করছেন।
শুরুতে কাজ খোঁজার জন্য বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটে (যেমনঃ Upwork, Fiverr, Toptal, Flexjobs, SimplyHired, Guru, Freelancer.com, 99designs, People Per Hour, TaskRabbit) দেখতে পারেন।এছাড়া বিভিন্ন আলাদা আলাদা স্কিলসেটের জন্যও আলাদা আলাদা ফ্রিল্যান্সিং সাইট রয়েছে। সেসব সাইটের জব পোস্টিং গুলোতে চোখ রাখুন। যদি আপনার স্কিলের সাথে সেগুলো মিলে তাহলে এপ্লাই করুন।
আপনার স্কিল ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের জন্য ফ্রিল্যান্সিং একটি পরিক্ষিত আর জনপ্রিয় পদ্ধতি। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে আপনাকে যেসব কাজ করতে হবে, তার একটি চেকলিস্ট দেখে নিন।
- ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্য কি আগে ঠিক করুন: আপনি কি পার্ট টাইম জব হিসেবে এটা করতে চান নাকি ফুলটাইম জব হিসেবে করতে চান সেটা ঠিক করে নিন। শুধু ফ্রিল্যান্সিং করে শুরুতেই প্রচুর অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হয় না, এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা পেতে কিছু সময় প্রয়োজন তাই আগে আপনার লক্ষ্য ঠিক করে নিন যাতে সহজে নিরাশ না হন।
- একটি লাভজনক নিস খুঁজে বের করুন: আপনি কোন নিসে সবচে বেশি কম্ফোর্টেবল সেটা খুঁজে বের করুন। আপনার অভিজ্ঞতা, ইন্টারেস্ট, শিক্ষা এসবের উপর ভিত্তি করে আপনার যে নিস সবচে লাভজনক মনে হয় সেটাকেই বেছে নিন। আপনার ইউনিক কি গুণাবলি আছে, সেগুলো খুঁজে বের করুন, অন্যদের থেকে আপনি এক্সট্রা কি কাজ করতে পারবেন সেটা ক্লায়েন্টকে বলুন।
- আপনার টার্গেট কাস্টোমারদের খুঁজে বের করুন: আপনি আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কাদের কাছে বিক্রি করতে চান তার একটি লিস্ট তৈরী করুন। সে অনুযায়ী আপনার পোর্টফোলিও আর কোল্ড ইমেইল রেডি করুন।
- স্ট্র্যাটেজিক প্রাইস ঠিক করুন: আপনি যদি স্বনির্ভর হতে চান, খুব অল্প রেটে কাজ করলে টিকে থাকতে পারবেন না। তাই বছরে কত টাকা আপনি কামাই করতে চান সেটা হিসাব করে আপনার প্রতি ঘন্টায় কত চার্জ করবেন তা ঠিক করুন।
- পিচ, কোল্ড ইমেইল এবং ফার্স্ট ক্লায়েন্ট: আপনার ক্লায়েন্টদের খুঁজে বের করার পর তাদের ইমেইল আর আপনার পিচ রেডি করুন। LinkedIn এ তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এমনভাবে আপনার পিচ রেডি করুন যাতে আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়।
৪। অনলাইন কোচিং শুরু করুন আর মানুষকে গাইড করুনঃ
আপনি যেই বিষয়ে এক্সপার্ট অথবা যেই ক্ষেত্রে আপনি সফল, সেই বিষয়ে নতুন দের সাহায্য করতে অনলাইন কোচিং বা কন্সালট্যান্সি শুরু করতে পারেন। এটি অনলাইনে অর্থ উপার্জনের দারুণ একটি পদ্ধতি। যেমন ধরুন আপনি একজন এক্সপার্ট ডিজিটাল আর্টিস্ট তাহলে আপনি শুধু আপনার আর্ট বিক্রি করেই না, বরং অন্যদের ডিজিটাল আর্ট শিখিয়েও অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
আপনি হয়তো কিভাবে কোচিং বা কন্সালট্যান্সি শুরু করবেন তা নিয়ে ভাবছেন, এরও সহজ সমাধান রয়েছে। বিভিন্ন অনলাইন কোচিং প্লাটফর্মে আপনার কাজ শুরু করতে পারে। সেখানে আপনার কোর্স রেজিস্টার করলে অডিয়েন্স আর পেমেন্ট দুই ক্ষেত্রেই সুবিধা পাবেন। এমন দুইটি প্লাটফর্মের নাম Clarity.fm আর Coach.me।
তাহলে দেরি না করে আজই প্ল্যাটফর্মগুলো দেখে আসুন। একটি একাউন্ট খুলে শুরু করে দিতে পারেন অনলাইন কোচিং।
এছাড়াও আপনি নিজের ওয়েবসাইটে অনলাইন কোর্স তৈরী করতে পারেন। যদিও এই ক্ষেত্রে সফল হতে বেশ সময় লাগে। শুধু কোর্স তৈরী ছাড়াও লিখতে পারেন ই-বুক। আপনার যেকোনো ক্ষেত্রে এক্সপেরিয়েন্সগুলোকে ছড়িয়ে দিন নতুনদের মাঝে। আপনার কোর্সটি তৈরী করতে নিচের স্টেপগুলো ফলো করুন।
- আপনার দক্ষতা : আপনি যেই বিষয়টিতে সবচেয়ে দক্ষ, সেটিকে বেছে নিন।
- কোর্সে কে কে আগ্রহী : আপনার কোর্সটিতে কারা আগ্রহী হবে তাদের খুঁজে বের করুন। এক্ষেত্রে একটি টিপস হল, আগেই কিছু পেমেন্ট নিয়ে নিন। কারণ পেমেন্ট ছাড়া শুরু করলে অনেকেই অনলাইন কোর্স গুরুত্ব সহকারে নিবে না।
- কন্টেন্ট : আপনার কন্টেন্ট দ্রুত লিখুন এবং রেকর্ড করে রাখুন। প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের থেকে ফিডব্যাক নিন। এভাবে আপনার কন্টেন্ট আরো সমৃদ্ধ হবে।
- ইমেইল অডিয়েন্স : আপনার কোর্সটি লঞ্চ করার আগে আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদেরকে ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দিন।
যদি আপনার ইতিমধ্যে কোনো ব্লগ না ইমেইল লিস্ট না থাকে, তবুও সমস্যা নেই। শুরু থেকে কিভাবে কোচিং শুরু করতে পারেন তা নিচে বর্ণনা করছি।
- অনলাইন কোর্সে রেজিস্টার: শুরুতে কোনও একটি অনলাইন কোর্সে রেজিস্টার করুন। এতে আপনার নতুন অভিজ্ঞতা হবে, আর সাথে কম্পিটিটর এনালাইসিসও করতে পারবেন। এতে আপনার নিজের কোর্স ডিজাইন করতে সুবিধা হবে।
- নিস সিলেক্ট: আপনার নিস সিলেক্ট করুন এবং সেই নিসে ডিমান্ড কেমন তা চেক করুন। এজন্য আপনি গুগলে কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করে দেখতে পারেন কোন কোর্সগুলোর ডিমান্ড সর্বাধিক। এছাড়াও মিডিয়াম বা অন্যান্য ব্লগিং সাইটে নিয়মিত খোঁজ নিন, কোন ধরনের কোর্সগুলোর ডিমান্ড সবচে বেশি। আপনি যদি সেসব দিকে স্কিলড হন, তাহলে সেই নিসে কোর্স ডিজাইন করতে পারেন।
- নিস পার্টনার আর কোলাবরেটরদের খুঁজে বের করুনঃ আপনি যখন অনলাইন কোর্স তৈরী করতে শুরু করবেন, দেখবেন আপনার মতো অনেকেই এসব কোর্স তৈরী করছেন। তাদের সাথে পরিচিত হয়ে নিন। আপনার নিস এর সাথে জরিত Influencer আর কোর্স কো-অরডিনেটরদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করুন। তাদের সাথে কোলাবরেশন করতে পারেন আবার চাইলে তাদের সাথে এফিলিয়েটও হতে পারেন। এতে করে আপনার দর্শক অনেক বেড়ে যাবে আর সেলও বাড়বে।
- অসাধারণ কোর্স এক্সপেরিয়েন্স তৈরী করুনঃ আপনি কিছুদিন কোর্স তৈরী করা নিয়ে কাজ করলে আস্তে আস্তে বুঝতে পারবেন কোন ধরনের কন্টেন্ট দর্শকরা পছন্দ করছে। আপনার নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইটে কোর্সগুলো হোস্ট করুন। সেখানে আপনি সহজে ফিডব্যাক নিতে পারবেন এবং কোর্সগুলো কন্ট্রোল করা সহজ হবে।৮। আপনার কোর্স কমিউনিটি তৈরী করুনঃ
- স্যোশাল প্ল্যাটফর্মে কমিউনিটি তৈরী করুনঃ আপনার কোর্স যারা করছে তাদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতে একটি স্যোশাল প্ল্যাটফর্মে কমিউনিটি তৈরী করুন। এতে করে আপনার কোর্সের মার্কেটিং অনেক সুবিধা হবে। তাছাড়া তারা কোন ধরনের কন্টেন্ট পছন্দ করছে আপনি তা জানতে পারবেন। আপনি তাদের ফিডব্যাক নিয়ে আরো ভালো কিছু তৈরী করতে পারবেন।
- কোর্স মার্কেটপ্লেস: এছাড়া আপনি কোর্স তৈরী করতে Udemy, Skillshare এধরনের প্ল্যাটফর্মও ব্যবহার করতে পারেন।
- কোর্স মার্কেটিংঃ Facebook, LinkedIn, Reddit এধরনের সোশ্যাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কোর্স মার্কেটিং করতে পারেন। এছাড়া আপনার নিসের ব্লগগুলোতে চোখ রাখবেন কোনো মার্কেটিং এর সুযোগ আছে নাকি। আপনি যদি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স একবার খুঁজে পান তারপর কাজটি আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।
৫। ইউটিউব চ্যানেল খুলে উপার্জন শুরু করুনঃ
বর্তমান দুনিয়ায় সবচে জনপ্রিয় সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে ইউটিউব একটি।
ইউটিউব চ্যানেল্গুলোকে আমরা দুইটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে পারি।
- এডুকেশনাল চ্যানেলঃ নতুন কিছু শেখার জন্য আজকাল সবার প্রথম পছন্দ ইউটিউব। তাই ইউটিউবে এডুকেশনাল কন্টেন্ট অত্যন্ত জনপ্রিয়।
- এন্টারটেইনমেন্টঃ ওয়েব সিরিজ, প্রোডাক্ট রিভিউ, কমেডি স্কেচ, প্র্যাংক, এমনকি ভিডিও গেইম খেলার ভিডিও! এমন অসংখ্য নিসে ইউটিউবে রয়েছে উপার্জনের অপার সম্ভাবনা।
এখন আলোচনা করা যাক আপনি কিভাবে ইউটিউব থেকে উপার্জন শুরু করতে পারেন।
ইউটিউব চ্যানেলটি হবে আপনার সকল কন্টেন্টের হোমবেইজ। আপনার যদি অলরেডি জিমেইল একাউন্ট খোলা থাকে সেটা দিয়েই আপনি ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেটা সেট-আপ করা শুরু করে দিতে পারেন। এমন একটি ইউজার নেইম ঠিক করুন যেটা আপনার কন্টেন্টের সাথে মানানসই আর সহজেই মনে রাখা যায়।
আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি যাতে সবাই সহজে খুঁজে পায় সেজন্য “Advanced” সেকশনে গিয়ে আপনার নিসের সাথে সম্পর্কিত কী-ওয়ার্ডগুলো আর আপনার টার্গেটেড দেশগুলো এড করুন। আপনার পার্সোনাল ব্লগসাইট থাকলে সেটি এসোসিয়েটেড ওয়েবসাইট হিসেবে এড করুন। এবার কন্টেন্ট তৈরী আর আপ্লোড করার পালা। এজন্য আপনার একটি হাই কোয়ালিটি ক্যামেরা দরকার স্মার্ট ফোনের ক্যামেরাও চলবে, তবে একটি ট্রাইপড কিনে নিন।
প্রথমে হয়তো খুব ভালো হবে না, কিন্তু হাল ছাড়বেন না। একটি নির্দিষ্ট শিডিউল মেইনটেইন করতে চেষ্টা করুন, এতে করে আপনার নিজের অডিয়েন্স তৈরী হবে।
আপনার ভিডিও যাতে সার্চ করলে সামনের দিকে আসে সেজন্য আকর্ষণীয় ডেসক্রিপশন আর প্রিভিউ তৈরী করুন। মানুষ যাতে দেখা মাত্র আপনার ভিডিওতে ক্লিক করে তেমন ইমেজ ব্যবহার করুন। আপনার ভিডিওগুলোতে অডিয়েন্স বাড়াতে সেগুলো টুইটার, ফেসবুক এসব সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। এছাড়া কমেন্ট সেকশনে মানুষকে এংগেজড রাখতে চেষ্টা করুন। আপনার চ্যানেলকে ঘিরে একটি কমিউনিটি তৈরী করতে চেষ্টা করুন।
৬। রিমোট কোন কোম্পানিতে পার্ট টাইম বা ফুল টাইম চাকরি নিনঃ
আপনি যদি রিমোট জব করতে চান, অর্থাৎ বাড়িতে বসে অনলাইন চাকরি করতে চান, তাহলে ইন্টারনেটে এমন অসংখ্য চাকরি খুঁজে পাবেন। এক্ষেত্রে আপনি কোথায় থেকে কাজ করছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। আপনার সঠিক কমিউনিকেশন ট্যুল থাকলে যেকোনো জায়গায় বসেই এসকল চাকরি করা সম্ভব। এজন্য আপনার বড় কোনো ডিজাইনার বা প্রোগ্রমার হওয়ার প্রয়োজন নেই।
আপনি যদি এধরনের কাজে ইন্টারেস্টেড হয়ে থাকেন, তাহলে নিচের অপশনগুলো দেখে নিনঃ
- অনলাইন ফোকাস গ্রুপ বা সার্ভেতে অংশগ্রহণ করুনঃ অনলাইনে এক্সট্রা কিছু উপার্জনের জন্য এটি একটি দারুণ আইডিয়া। যদিও এটাতে খুব বেশি আয় হবে না, কিন্তু এটিতে খুব বেশি এফোর্টও দিতে হবে না। আপনার বয়স, ঠিকানা ইত্যাদি জমা দিয়ে বিভিন্ন সার্ভেতে অংশ নিতে পারেন। এধরনের কিছু ওয়েবসাইট হল Survey Junkie, User Interviews, InboxDollars।
- ওয়েবসাইট টেস্ট করুনঃ কোন ওয়েবসাইটটি ভালো কোনটি ভালো না সেটা বুঝতে বিশেষ কোনো স্কিলের প্রয়োজন নেই। আপনি ওয়েবসাইটের ডিজাইন আর নেভিগেশনের উপর ভিত্তি করে এটি কেমন কাজ করছে তা আপনি নির্ণয় করবেন। শুধু এই কাজ করেও ঘন্টায় ১০-৩০ ডলার কামাই করা সম্ভব। এজন্য আপনি UserTesting, Userlytics, TryMyUI, Userfeel, TestingTime এসব ওয়েবসাইটে সাইন আপ করতে পারেন।
- অডিওবুকের Narration করে অর্থ উপার্জন করুনঃ আজকাল অডিওবুক খুবই পপুলার হচ্ছে। আপনার যদি অভিনয়ের এক্সপেরিয়েন্স থাকে বা কন্ঠ সুন্দর হয়, তাহলে আপনি অডিওবুক তৈরী করে অর্থোপার্জনের চিন্তা করতে পারেন। অনেক সাইট আছে যেখানে লেখকরা অডিওবুক পারফর্মারদের সাথে যোগাযোগ করে থাকেন, সেখান থেকে আপনি এধরনের কাজ খুঁজে পেতে পারেন।
- একটি ই-বুক লিখে পাবলিশ করতে পারেনঃ ই-বুক লিখা বা পাবলিশ করা অনেক রাইটারদেরই স্বপ্ন। আপনার যদি মনে হয় আপনার এক্সপেরিয়েন্স দিয়ে একটি বই লিখতে পারেন, তাহলে আজকেই এক্সপেরিমেন্ট শুরু করে দিতে পারেন। আপনার স্কিল এবং জ্ঞান আপনি ই-বুকের মাধ্যমে নতুনদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারেন। এতে করে তারাও তাদের ক্যারিয়ার শুরু করতে উপকৃত হবে। আপনি Sellfy ট্যুল ব্যবহার করে আপনার পিডিএফ পাঠকদের পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারেন।
- আমাজন ম্যাকানিকাল টার্কে মাইক্রো-জব শুরু করতে পারেনঃ Amazon Mechanical Turk এমন একটি সার্ভিস যেখানে আপনি ছোট ছোট কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।যেমন সার্চ রেজাল্ট রেটিং করা, বানান চেক করা, আর্টিকেলের ক্যাটাগরি করা, বেসিক ট্রান্সলেশন। এধরনের ছোটখাটো কাজের জন্য আপনিও সাইন আপ করতে পারেন।
৭। বিভিন্ন নিস সাইটে আপনার সার্ভিস প্রোভাইড করতে পারেনঃ
আপনি যদি কোনো নিসে খুব অভিজ্ঞ হন তাহলে সেই নিসের সাইট গুলোতে আপনি সার্ভিস প্রোভাইড করতে পারে। যেমন মার্কেটিং, ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এসব কাজের জন্য আলাদা অনেক ফ্রিল্যান্সিং সাইট রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ডিজাইনারদের জন্য 99design বা Dribble, মার্কেটিং আর SEO প্রফেশনালদের জন্য Cloudpeeps, প্রফেশনাল সফটওয়্যার ডেভেলপারদের জন্য TopTal, Crew, Gigster।
৮। লোকাল কোম্পানিগুলোর জন্য গ্রাফিক ডিজাইন করতে পারেনঃ
আপনি যদি গ্রাফিক ডিজাইনে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন Adobe Illustrator, Venngage, Stencil, Visme এসব ট্যুল ব্যবহার করে সহজের লোকাল কোম্পানিগুলোতে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করতে পারেন। ক্রিয়েটিভ মাইন্ডসেট থাকলে এসব কাজ আপনার কাছে একইসাথে লাভজনক আর উপভোগ্য হবে।
৯। নিস নিউজলেটার ব্যবহার করে ইমেইল মার্কেটিং করতে পারেনঃ
অনলাইন মার্কেটিং এর দুনিয়ায় ইমেইল মার্কেটিং এর এখনো জুরি নেই। তাই ছোট থেকে বড় সব কোম্পানিই ইমেইল মার্কেটিং করে থাকে। নিউজলেটার গুলো দিয়ে স্পেসিফিক ইউজারদেরকে তাদের পছন্দ অনুসারে ইমেইলে বিভিন্ন ইন্টারেস্টিং কন্টেন্ট পাঠানো হয়। MailChimp, ConvertKit, HubSpot, AWeber হল এমন কিছু ট্যুল যেগুলো ব্যবহার করে আপনিও নেমে পড়তে পারেন ইমেইল মার্কেটিং এ।
১০। Instagram Influencer হয়ে যেতে পারেনঃ
Instagram এ ভালো ফলোয়ার থাকলে, আপনিও Influencer হিসেবে অনলাইনে এক্সট্রা ইনকাম শুরু করতে পারেন। আজকাল ছোট-বড় সব কোম্পানিই মার্কেটিং এর জন্য Influencer দের দ্বারস্থ হয়ে থাকে। যদিও ইনস্টাগ্রামে পপুলার হওয়া দিনদিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আপনার যদি অলরেডি কোনো নিসে ভালো দখল থাকে আর আপনি রেগুলার ভালো কন্টেন্ট পোস্ট করেন, তাহলে আপনিও দ্রুত জনপ্রিয়তা পেতে পারেন।
১১। আপনার আর্ট আর ডিজাইন Society6 এ বিক্রি করতে পারেনঃ
আপনি যদি সুন্দর নকশা বা ডিজাইন করতে পারেন যা ফোন কেইস, টিশার্ট, ওয়াল হ্যাঙ্গিং, বেড কভার বা কুশনে নান্দনিক দেখাবে, সেগুলো বিভিন্ন সাইটে বিক্রি করতে পারেন। এমনই একটি ওয়েবসাইট হল Society6. আপনার করা ডিজাইন যদি বিক্রি হয়, সে অনুসারে আপনি কমিশন পাবেন।
১২। লোকাল বিজনেস কনসাল্টিংঃ
আপনার যদি কোনো নির্দিষ্ট ব্যবসায় খুব ভালো অভিজ্ঞতা থাকে। তাহলে সেই নিসের লোকাল বিজনেসে কনসাল্টিং করা একটি লাভজনক ব্যবসা। আপনি যদি এক্সপার্ট মার্কেটার বা বিজনেস স্ট্র্যাটেজিস্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কনসাল্টিং পেয়ে অনেকেই উপকৃত হবে।
১৩।স্টক ফটো বিক্রি করে অর্থ উপার্জনঃ
আপনি যদি ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করেন, আর দারুণ সব ছবি তুলতে পারেন, তাহলে আপনার জন্য স্টক ফটো বিক্রি করা একটা ভালো অপশন। Shutterstock বা iStockPhoto এমন দুইটি ওয়েবসাইট। যখনই কেউ আপনার তোলা ছবিটি ডাউনলোড করবে, আপনি তার একটি রয়ালটি পাবেন।
১৪। প্রফেশনাল ওয়েবসাইটে প্রশ্নের উত্তর দিনঃ
আপনি যে ক্ষেত্রে প্রফেশনাল, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ভেট যাই হন না কেন, বিভিন্ন প্রফেশনাল ওয়েবসাইটে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে টাকা পেতে পারেন। তবে এজন্য আপনাকে কিছু কোয়ালিফিকেশনের প্রমাণ দিতে হবে। JustAnswer এমন একটি ওয়েবসাইট।
১৫। ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হিসাবে কাজ করুনঃ
অনেক প্রতিষ্ঠান রিমোট ওয়ার্কের জন্য ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে। সেসব জায়গায় এপ্লাই করতে পারেন। আপনাকে মূলত ডাটা এন্টি, বুককিপিং, ট্রাভেল বুকিং, ইমেইল ম্যানেজমেন্ট এসব কাজ দেওয়া হবে যা আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন
১৬।ভার্চুয়াল ইংলিশ টিউটরঃ
আপনি যদি ইংরেজিতে দক্ষ হন, তাহলে এই কাজ করে সহজেই অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ হিসেবে ইংরেজি ভাষার কদর সারা বিশ্ব জুড়েই আছে। তাই এই কাজের ডিমান্ডও অনেক। এধরনের কাজের জন্য আপনি Preply, VerbalPlanet, Chegg Tutors এসব ওয়েবসাইট ঘুরে দেখতে পারেন।
১৮। অডিও ট্রান্সক্রাইব করুনঃ
অনলাইনে ভিডিও ট্রান্সক্রাইব করে আপনি অনলাইনে অতি অল্প সময়ে কোনো স্কিল ছাড়াই অর্থ উপার্জন করতে পারেন। বিগিনারদের জন্য অডিও ট্রান্সক্রিপশন শুরু করার কয়েকটি ওয়েবসাইট হোলঃ Transcribe Anywhere, TranscribeMe, Quicktate, Rev, Tigerfish, Crowdsurf ইত্যাদি।
১৯। কোম্পানির নাম আর স্লোগান ঠিক করার অনলাইন কন্টেস্টে যোগ দিনঃ
শুনতে অবাক করা মনে হলেও কোম্পানীর নাম আর স্লোগান ঠিক করার জন্যও বিভিন্ন অনলাইন কন্টেস্ট করা হয়ে থাকে। আপনি যদি এমন আকর্ষণীয় নাম আর স্লোগান খুঁজে বের করতে পারদর্শী হন, তাহলে এসব কন্টেস্টে যোগ দিতে পারেন।
২০। অনলাইনে ভিডিও তৈরী আর ভিডিও এডিটিং এর কাজ করুনঃ
Mandy, Creative Cow Job Search, ProductionHub – এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে আপনি প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
২১।পার্সোনাল ট্রেইনার বা ফিটনেস কোচ হিসেবে কাজ করুনঃ
আপনি যদি শরীরচর্চা আর ফিটনেস নিয়ে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন, তাহলে অনলাইনেই পার্সোনাল ট্রেইনার হিসেবে কাজ করতে পারেন। আর এর সাথে আপনার ফিটনেস ব্লগ থাকলে বা আপনি কোনো কোম্পানির এফিলিয়েট হয়ে থাকলে এর সাথে আরও কিছু এক্সট্রা ইনকাম যোগ করতে পারবেন
শেষ কথাঃ
আজকের যুগটাই অনলাইন ক্যারিয়ার গঠনের। তাই আপনি যদি অনলাইনে অর্থ উপার্জনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এযুগের সেরা কাজটি করছেন। আপনার হাতে এক্ষেত্রে অপশনের কোনো অভাব নেই, শুধু দরকার উদ্যোমের, তাই দেরি না করে আজই পা বাড়ান আপনার নতুন ক্যারিয়ারের পথে।