২০২১ সাল আপনার জন্য খুলে দিতে পারে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের নতুন দুয়ার। নতুন এই বছরটিকে আপনার জীবনে অনলাইন অর্থ উপার্জনের মাইলফলক করতে আজই প্রবেশ করুন এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সম্ভাবনাময় রাজ্যে। অনেকেই হয়তো ইতিমধ্যেই কিছুটা জানেন এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে, অতি দ্রুত উন্নতির স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাতে এফিলিয়েট মার্কেটিং হতে পারে আপনার সিঁড়ি। কিন্তু সেজন্য আপনার দরকার সঠিক পথ নির্দেশনা আর এ বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান।

তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই,, এই আর্টিকেলটিতে আপনি জানতে পারবেন এফিলিয়েট মার্কেটিং এর এ-টু-জেড। আপনার সকল প্রশ্নের জবাব নিয়ে ধাপে ধাপে সাজানো হয়েছে এই গাইডলাইন, যাতে আজই আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর দুনিয়ায় জীবিকা উপার্জনের সূচনা করতে পারেন। তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

আর্টিকেলটিতে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সকল বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে, তাই আপনার সুবিধার জন্য কয়েকটি আলাদা সেকশন তৈরী করা হয়েছে।

সেকশন ১. এফিলিয়েট মার্কেটিং কী?
সেকশন ২. সঠিক এফিলিয়েট প্রোগ্রামটি কীভাবে খুঁজে পাবেন?
সেকশন ৩. আপনার প্রথম এফিলিয়েট প্রডাক্টটি কীভাবে নির্বাচন করবেন?
সেকশন ৪. এফিলিয়েট প্রডাক্ট প্রমোশন এবং বিক্রয়ের গাইডলাইন
সেকশন ৫. এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ট্যুলস।
সেকশন ৬. এফিলিয়েট মার্কেটিং বিষয়ে আরো প্রশ্নোত্তর।

সেকশন ১. এফিলিয়েট মার্কেটিং কী?

এফিলিয়েট মার্কেটিং হল অন্যদের প্রোডাক্ট প্রমোশনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের একটি পদ্ধতি। নতুনদের জন্য অনলাইনে অর্থ উপার্জনের জন্য এটি একটি সুবিধাজনক উপায়।

একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে আপনার কাজ হল অন্যদের প্রোডাক্ট খুঁজে বের করা এবং এর প্রমোশন করা। যার প্রোডাক্ট আপনি প্রমোট করছেন, তিনি প্রতিটি সেল বা প্রতিটি লিডের জন্য আপনাকে কিছু কমিশন দিবেন।

আপনার যদি কোনো ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল অথবা কোনো ব্যবসা থেকে থাকে, তাহলে আপনি সহজেই এভাবে অন্য কারো প্রোডাক্ট প্রোমশনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। মজার বিষয় হল, এজন্য আপনাকে নতুন কিছুই উৎপাদন করতে হচ্ছে না, শুধু মাত্র অন্যের প্রোডাক্ট প্রোমোশন করেই আপনি লাভের অংশীদার হচ্ছেন।

আপনি যদি নতুন অনলাইন বিজনেস করতে আগ্রহী হন এবং কোন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন তা নিয়ে চিন্তিত হন, তাহলে খুব সহজেই আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসাটির কাস্টোমারদের সাথে আগে পরিচিত হয়ে নিতে পারেন, যা পরবর্তীতে আপনার নিজের ব্যবসাকে দ্রুত সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রথমেই আপনি অনলাইনে ব্যবসার খুঁটিনাটি আর কাস্টোমার বেইজ সম্পর্কে ধারনা নিয়ে রাখতে পারেন। অর্থাৎ নিজের ব্যবসা শুরুর আগে এফিলিয়েট মার্কেটিং হবে আপনার প্রস্তুতিপর্ব, যা আপনাকে বাজার সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে নিজের প্রোডাক্ট উৎপাদনের ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে না, অন্যের উৎপাদিত প্রোডাক্ট বিক্রি করেই আপনি লাভবান হচ্ছেন। যত বেশি প্রোডাক্ট আপনি বিক্রয় করবেন, তত বেশি লাভ আপনি পেতে থাকবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পূর্ণরূপে জানতে আর এর কার্যপদ্ধতি বুঝতে আপনাকে এই ইন্ডাস্ট্রি সংক্রান্ত কিছু বেসিক টার্ম শিখতে হবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং টার্মসঃ সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে বুঝার জন্য যে মার্কেটিং টার্মগুলোর সাথে আপনার পরিচিত হতে হবে তা নিচে সংক্ষিপ্তরূপে আলোচনা করা হলঃ

  • এফিলিয়েটঃ
    • যে ব্যক্তি কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রমোশন করে তা বিক্রির জন্য কমিশন নিয়ে থাকে তাকে এফিলিয়েট অথবা এফিলিয়েট মার্কেটার বলা হয়।
  • মার্চেন্টঃ
    • যার প্রোডাক্ট বিক্রয় করা হবে, অর্থাৎ যিনি কমিশন দিয়ে থাকেন।
  • এফিলিয়েট প্রোডাক্টঃ
    • যে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রয়ের মাধ্যমে এফিলিয়েট কমিশন নিয়ে থাকেন। একে অফারও বলা হয়।
  • এফিলিয়েট নেটওয়ার্কঃ
    • এটি হল একটি থার্ড-পার্টি সার্ভিস যার মাধ্যমে মার্চেন্ট ও এফিলিয়েটের মধ্যে যোগাযোগ হয়ে থাকে। এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক মার্চেন্টের সাথে এফিলিয়েটের যোগাযোগ করানো ছাড়াও তাদের প্রোডাক্ট ও পেমেন্ট সংক্রান্ত বিষয়াদি দেখে থাকে। সেলস এবং ট্রাফিকের হিসাব রাখাও এফিলিয়েট নেটওয়ার্কের একটি কাজ।
    • তেমনই একটি জনপ্রিয় এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক হল আমাজন এসোসিয়েটস
  • এফিলিয়েট লিংকঃ
    • এটি হল একটি ইউনিক লিংক, যার দ্বারা ট্রাফিক ট্র্যাক করা হয়। এটি তৈরী ও ম্যানেজ করার কাজও এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক করে থাকে। অবশ্য মার্চেন্ট নিজেও লিংক তৈরী করতে পারেন।
    • প্রথমে আপনি কোন প্রোডাক্টটি প্রমোট করতে চান তা নির্বাচন করবেন, তারপর সেই প্রোডাক্টের লিংক আপনার ওয়েবসাইটে প্লেস করবেন, অর্থাৎ লিংকটি যাতে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছায় সেই ব্যবস্থা করবেন। এই লিংকটি যখন কেউ ব্যবহার করবে এবং কোনো প্রোডাক্ট কিনবে তখনই আপনি কমিশন পাবেন। উদাহরণসরূপ, আমাজন আসোসিয়েটস প্রোডাক্টের একটি এইচটিএমএম লিংক দিয়ে থাকে, যা আপনি টেক্সট বা ইমেজ বা উভয়রূপেই আপনার ওয়েবসাইটে রাখতে পারেন।
    • যেমন ধরুন আপনি একটি মোবাইল ফোন প্রমোট করতে চান, তাহলে আপনাকে যা করতে হবেঃ
      • প্রথমে একটি প্রোডাক্ট পছন্দ করুন।
      • সহজেই প্রোডাক্টটির এইচটিএমএল কোডটি কপি করে আপনার ওয়েবসাইটে কোথাও প্লেস করতে পারেন, অথবা “বাল্ক লিংক” অপশনে গিয়ে আরো সুবিধা পেতে পারেন, যেমন লিংকটি আপনার ওয়েবসাইটে কিভাবে প্রদর্শিত হবে (ছবি বা লিংক) সেটা সিলেক্ট করতে পারেন।
  • কমিশনঃ
    • প্রতিটি সেলের জন্য মার্চেন্ট এফিলিয়েটকে যে পূর্বনির্ধারিত অর্থ দিয়ে থাকেন।
  • ইপিসিঃ
    • ইপিসি হল আরনিং পার ক্লিক। অর্থাৎ প্রতিবার যখন কেউ এফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করবে যে পরিমাণ অর্থ এফিলিয়েট গড়ে পাবেন। ইপিসি যত বেশি হবে উপার্জন তত বেশি হবে, আবার উপার্জন বেশি হলে ইপিসি বাড়বে।
  • ইউনিক ক্লিকঃ
    • ইউনিক কতটি ক্লিক পড়েছে আপনার লিংকটিতে। যদি একই ব্যক্তি তিনবার ক্লিক করে তাহলে সেটি ইউনিক ক্লিক হিসেবে নয়, বরং তিনটি র ক্লিক হিসেবে বিবেচিত হবে।
  • কুকিজঃ
    • কুকি হল এক ধরণের টেক্সট ফাইল যা দ্বারা যারা এফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করেছেন তাদের প্রতিজনকে আলাদাভাবে একেকটি ইউনিক আইডি প্রদান করা হয়। এটি ভিজিট্রদের ওয়েব ব্রাউজারে সেইভড থাকে, এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তারা আপনার কাস্টোমার হিসেবে পরিগনিত হয়।
    • এর সুবিধা হল এই যে, যদি কোনো কাস্টোমার একবার লিংকে ঢুকে বেরও হয়ে যায়, কিন্তু পড়ে সেই প্রোডাক্ট কিনে, তবু আপনি তার কমিশন পাবেন।
  • কুকির মেয়াদঃ
    • এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক কুকির একটি মেয়াদ ঠিক করে দিবেন অর্থাৎ সেই মেয়াদের পর বিক্রয় হলে আর সেটার জন্য এফিলিয়েট কমিশন পাবেন না।
    • বিষয়টি এভাবে বলা যায়, ধরুন কুকির মেয়াদ এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক থেকে ৩০ দিন ধরে দেওয়া হল।
    • তাহলে কোনো কাস্টোমার যদি আপনার এফিলিয়েট লিংক দিয়ে মার্চেন্টের ওয়েবসাইটে যায়, কিন্তু তখন কেনাকাটা না করে, তাহলেও অসুবিধা নেই। সেই কাস্টোমার ৩০ দিনের মধ্যে কেনাকাটা করলেই আপনি তার জন্য কমিশন পাচ্ছেন।
  • কনভার্সনঃ
    • যখন কোনো পটেনশিয়াল কাস্টোমার আপনার কাঙ্ক্ষিত কাজটি করবেন, সেটাকেই বলা হয় কনভার্সন।
    • যেমন যদি আপনার সাথে মার্চেন্টের ডিলটি এমন হয় যে, আপনি প্রতিটি সেলের জন্য কমিশন পাবেন, তাহলে যখন কাস্টোমার কোনো কিছু কিনবে, সেটাই কনভার্সন।
    • আবার এমন হতে পারে যে, আপনি প্রতিটি লিডের জন্য কমিশন পাচ্ছেন, তাহলে কাস্টোমার যখন মার্চেন্টকে তার ইমেইল অ্যাড্রেসটি দিবে, অথবা কোনো অনলাইন ফর্ম ফিল আপ করবে সেটি কনভার্সন হিসেবে বিবেচিত হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?

এখন পর্যন্ত যা আলোচনা করা হয়েছে, তা থেকে আশা করি আপনি বেসিক টার্মগুলো বুঝতে পেরেছেন। তাহলে আমরা এখন এফিলিয়েট মার্কেটিং কি করে কাজ করে সে বিষয়ে আলোচনা করতে পারি। এর ৫টি ধাপ রয়েছে। ধাপগুলো হলঃ

  • একটি এফিলিয়েট নেটওয়ার্কে সাইন আপ করুন,
  • মার্কেটিং এর জন্য একটি এফিলিয়েট প্রোডাক্ট পছন্দ করুন,
  • এফিলিয়েট প্রোডাক্টটি প্রমোট করুন,
  • ক্রেতারা আপনার লিংক দিয়ে প্রোডাক্টটি ক্রয় করবেন,
  • আপনি কমিশনের টাকা পাবেন।

সেকশন ২. সঠিক এফিলিয়েট প্রোগ্রামটি কীভাবে খুঁজে পাবেন?

বর্তমানে অসংখ্য এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক রয়েছে। আপনি যদি জানেন কী ধরনের প্রোডাক্ট আপনি প্রমোট করতে চান, তাহলে সহজেই আপনি বিভিন্ন অপশন পেয়ে যাবেন।

কিছু প্রথম সারির এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক হল-

কিন্তু এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য অপশন। এতো অপশনের মধ্যে আপনার জন্য উপযুক্ত কোনটি তা কি করে বুঝবেন?

এই প্রশ্নের উত্তর পেতে নিম্নোক্ত বিষয় গুলো প্রথমে মাথায় রাখতে হবেঃ

  • তাদের প্রোডাক্টগুলো আপনার কন্টেন্টের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন কি না?
    • আপনার ওয়েবসাইটের যে কন্টন্ট রয়েছে, প্রোডাক্টটি তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। নতুবা আপনার যে অডিয়েন্স তারা প্রোডাক্টটি কিনতে আগ্রহী হবে না। আবার আরেকটি বিবেচ্য বিষয় হল, আপনি যে দেশের অডিয়েন্সদের কাছে জনপ্রিয়, সেখানে নেটওয়ার্কটি সার্ভিস দিচ্ছে কি না।
    • যেমন ধরুন, যদি আপনার ব্লগটি হয় প্যারেন্টিং সম্পর্কে তাহলে আপনি এমন কোনো নেটওয়ার্ক সিলেক্ট করবেন যাদের কাছে প্যারেন্টিং এর সাথে সম্পর্কিত প্রোডাক্ট আছে।
    • আপনি চাইলে একের অধিক নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে পারেন, তবে আগে একটি দিয়েই শুরু করা যাক।
    • এসকল কারনে প্রথমেই এমন একটি এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক নির্বাচন করুন যারা আপনার ব্লগ সংক্রান্ত নানান প্রাইস রেঞ্জের প্রোডাক্ট সরবরাহ করে থাকে।
  • আপনার ভিজিটররা কি কিনতে আগ্রহী হবেন?
    • ভিজিটররা যখন আপনার দেওয়া লিংকে ক্লিক করে মার্চেন্টের সাইটটিতে যাবেন তখন তারা প্রোডাক্টটি কিনবেন কিনা তা অনেকখানি নির্ভর করে সাইটটি কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য তার উপর। তাই অবশ্যই এমন নেটওয়ার্ক নির্বাচন করবেন যাদের ব্যবসায় ভালো সুনাম আছে।
    • তাদের ট্যুল এবং রিসোর্সগুলো সহজে ব্যবহারযোগ্য কিনা
    • এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই এফিলিয়েট নেটওয়ার্কের লিংক আপনার কন্টেন্টের মধ্যে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে হবে, যাতে করে অডিয়েন্স আপনার লিংকটিকে ক্লিক করে। অনেক এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক আছে যারা কাস্টোমাইজ করা যাবে এমন ব্যানার, প্রোডাক্ট ফিড, লিংক জেনারেটর এসব সুবিধা দিয়ে থাকে, যাতে করে আপনি সহজেই আপনার ওয়েবসাইটে লিংকটি আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। এসকল নেটওয়ার্ককে অবশ্যই আপনার পছন্দের তালিকায় রাখবেন।
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং পেমেন্ট স্ট্রাকচারটি কেমন?
    • আপনার লক্ষ্য হচ্ছে একটি প্রোডাক্ট প্রমোশনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা, তাই কোনো নেটওয়ার্কে সাইন আপ করার আগে পেমেন্ট কীভাবে হবে তা সঠিকভাবে জেনে নিন।
    • প্রথমেই পেমেন্টের মেথড এবং শিডিউল সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে নিন, যাতে করে আপনি বুঝতে পারেন এটি আপনার জন্য সুবিধাজনক হবে কি না।
    • যেমন, কোনো এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক যদি ডিরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার না করে, তাহলে আপনি আপনার দেশে পেওনিয়ার বা অন্য কোনো মাধ্যমে টাকা নিতে পারবেন কিনা তা আগেই নিশ্চিত করে নিন।
    • কোনো কোনো এফিলিয়েট নেটওয়ার্কে ভেরিয়েবল কমিশন রেট আছে, অর্থাৎ আপনি কি পরিমাণ সেল এনে দিচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে আপনাকে বেশি বা কম রেটে কমিশন দেওয়া হবে। আবার কোথাও কোথাও বোনাস অথবা নির্দিষ্ট কোনো প্রোডাক্ট প্রমোশনে বেশি কমিশনের ব্যবস্থাও থাকতে পারে।
আপনার প্রথম এফিলিয়েট একাউন্টটি তৈরী করুনঃ

এখন যেহেতু আপনি অপশন গুলো সম্পর্কে অবহিত, একটি এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক নির্বাচন করুন আর একটি ফ্রি একাউন্ট খুলে ফেলুন।

আপনি চাইলে ক্লিকব্যাংকে খুব সহজে কয়েক মিনিটেই একাউন্ট খুলতে পারেন। যেভাবে একাউন্ট খুলে কাজ শুরু করে দিতে পারেন তা নীচে বর্ণনা করা হলঃ

  • Clickbank affiliate network ওয়েবসাইটটিতে যান এবং Create your account now বাটনে ক্লিক করুন।
  • আপনার পারসোনাল ইনফরমেশন, ব্যাংকিং ইনফরমেশন এবং একাউন্ট ইনফরমেশন দিয়ে নতুন একাউন্ট তৈরী করুন।

সেকশন ৩. আপনার প্রথম এফিলিয়েট প্রডাক্টটি কীভাবে নির্বাচন করবেন?

এখন যেহেতু আপনার এফিলিয়েট নেটওয়ার্কে রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে, তাহলে কোন প্রোডাক্টটি আপনি প্রোমোট করবেন তা সিলেক্ট করা যাক।

শুরুর দিকে চাইলে আপনি বিভিন্ন ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করতে পারেন, যেমন, ই-বুক অথবা অনলাইন কোর্স। কারণ এগুলো সেল করা সহজ, আবার কমিশনও বেশি।

উদাহরণস্বরূপ, ক্লিকব্যাংকে অসংখ্য ডিজিটাল প্রোডাক্ট পেয়ে যাবেন, আবার আমাজন এফিলিয়েটসে বেশি পাবেন ফিজিকাল প্রোডাক্ট। ক্লিকব্যাংক প্রতি সেলে ২৫% কমিশন দিয়ে থাকে, কিন্তু আমাজনে সেটা ১০%।

কিন্তু প্রোডাক্ট সিলেকশনের ক্ষেত্রে শুধু কমিশনের দিকে নজর দিলেই হবে না। প্রোডাক্টটি অবশ্যই এমন হতে হবে,যা আপনার অডিয়েন্সকে আকর্ষণ করে। নাহলে, যত বেশি পারসেন্টেজই হোক না কেন, আপনি সেল করতে না পারলে, প্রফিটও পাচ্ছেন না।

পারফেক্ট এফিলিয়েট প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করার পদ্ধতিঃ

তিনটি সহজ ধাপে আপনার জন্য সঠিক প্রোডাক্টটি নির্বাচন করুন। ধাপগুলো হচ্ছেঃ

  • আপনার অডিয়েন্স কি ধরনের প্রোডাক্ট কিনতে চায় তা চিন্তা করে বের করুন,
  • অপশনগুলো থেকে সবচে ভালো হবে কোনটি তা সিলেক্ট করুন,
  • কন্টেন্ট তৈরির আগে আপনার চয়েসটি সঠিক কি না ভালো করে ভেবে নিন।

প্রথমে ব্রেইনস্টর্মের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখুন যাতে আপনার প্রোডাক্ট সিলেকশনে কোনো ভুল না হয়, নিচের প্রশ্ন গুলোর উত্তর খুঁজে বের করুন।

  • আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কারা?
  • তারা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়?
  • তাদের সমস্যা সমাধানে কী ধরনের প্রোডাক্ট প্রয়োজন?
  • আপনার নতুন সমাধানের কী আদৌ প্রয়োজন রয়েছে?

আপনার অডিয়েন্সদের প্রয়োজন সম্পর্কে জানতে সবচে সহজ উপায় হচ্ছে, সোশাল মিডিয়াতে সার্ভে করা। তাদের কাছে তাদের সমস্যাগুলো এবং বর্তমানে সমস্যা সমাধানে তারা কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা জিজ্ঞেস করুন। আপনার যদি ইতিমধ্যে কোনো ব্লগ বা সোশাল মিডিয়া একাউন্ট থেকে থাকে সেখান থেকেই শুরু করুন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সবচে দারুণ ব্যাপার হচ্ছে এর থেকে আপনার মার্কেট সম্পর্কে হাতে-কলমে ধারণা হবে, আপনি বুঝতে পারবেন, কোন ধরনের প্রোডাক্ট সবচে বেশি সেল হয়। এতে করে, পরবর্তীতে যদি আপনি নিজের প্রোডাক্ট বাজারে আনতে চান, আপনি সহজেই সেখানে লাভের মুখ দেখতে পাবেন।

তবে একবারেই বেশি প্রোডাক্ট নিয়ে আপনার অডিয়েন্সকে হতচকিত করে ফেলবেন না, আস্তে ধীরে সঠিক প্রোডাক্টটি নির্বাচন করুন।

যেভাবে আপনার প্রোডাক্ট নির্বাচন সঠিক কিনা তা বুঝবেনঃ

  • আপনি যেই প্রোডাক্টটি সিলেক্ট করেছেন তার ফিচারগুলো আপনার টার্গেট অডিয়েন্সকে জানান এবং তাদের জিজ্ঞেস করুন তারা টাকা খরচ করে এমন প্রোডাক্ট কিনবে কিনা।
  • প্রোডাক্টটির রিভিউ পড়ে দেখুন এবং এক্সপার্টদের মতামত নিন,
  • প্রোডাক্টটি অডিয়েন্সদের সমস্যার পরিপূর্ণ সমাধান করে কি না দেখে নিন।

যে সকল সমস্যা থাকলে প্রোডাক্টটি কোনোভাবেই সিলেক্ট করা যাবে নাঃ

ধরুন আপনি ক্লিকব্যাংক জয়েন করলেন এবং আপনি ওজন কমানোর জন্য কোনো ডায়েট প্ল্যান প্রমোট করার কথা ভাবছেন। এজন্য আপনাকে শুরুতেই সব ধরনের ডায়েট প্ল্যান খুঁটিয়ে দেখতে হবে, কোনটি প্রমোট করা ঠিক হবে।

যে সকল বিষয়ে আপনার লক্ষ্য রাখতে হবেঃ

  • এফিলিয়েট প্রোডাক্টটির সেলস পেইজটি কেমন?
    • এফিলিয়েট প্রোডাক্টের সেলস পেইজের মানের উপর নির্ভর করছে প্রোডাক্টটি বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু। অতিরিক্ত প্রমোশোনাল অথবা উদ্ভট দাবীদাওয়া করছে এমন প্রোডাক্ট বিক্রি হবার সম্ভাবনা কম। আপনার অডিয়েন্সকে এমন পেইজেই পাঠাবেন যেখানে প্রোডাক্টটি আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন করা আছে, যাতে মানুষ সেটা কিনতে আগ্রহী হয়।
  • এফিলিয়েট প্রোডাক্টটির সুখ্যাতি আছে কিনা?
    • মার্চেন্টের হিস্ট্রি এবং সুখ্যাতি আছে কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখুন। অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ।আবার অনেক কোম্পানী মানিব্যাক গ্যারান্টী দিয়ে থাকে, এটিও খেয়াল রাখতে হবে। যাতে কাস্টোমাররা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং আপনিও ক্ষতির শিকার না হন। এছাড়া কোম্পানিটি এফিলিয়েট কমিশন ঠিক ভাবে পরিশোধ করে কি না তাও আগে খোঁজ নিয়ে দেখুন।
  • প্রোডাক্ট স্ট্যাটিস্টিকসঃ
    • কোনো প্রোডাক্ট প্রমোশনের আগে তার কিছু পরিসংখ্যান দেখে নেওয়া জরুরি।
    • যেমনঃ
      • প্রতি সেলের জন্য আপনি কত টাকা উপার্জন করছেন।
      • কোনো প্রোডাক্ট বারবার কেনা হলে সেক্ষেত্রে আপনি কত করে কমিশন পাচ্ছেন।
  • গ্র্যাভিটিঃ
    • কোনো প্রডাক্ট কত ভালোভাবে বিক্রি হচ্ছে তা বুঝানোর জন্য গ্র্যাভিটি শব্দটি ব্যবহার করা হয়। একবছরে কোনো পণ্য বিক্রি করে কতজন এফিলিয়েট কমিশন পেয়েছেন, কবে সেগুলো বিক্রি হয়েছে এবং কতটি রিফান্ডের রিকোয়েস্ট এসেছে তার উপর ভিত্তি করে গ্র্যাভিটি হিসাব করা হয়।
    • গ্র্যাভিটি ২০-১০০ এর মধ্যে রয়েছে এমন প্রোডাক্ট সেল করুন। এই রেঞ্জের মাঝের থাকার অর্থ হল এর ভালো চাহিদা রয়েছে। গ্র্যাভিটি ২০ এর কম হলে বুঝতে হবে অপেক্ষাকৃত নতুন প্রোডাক্ট,যা সেল করা কঠিন।আবার গ্র্যাভিটি ১০০ এর বেশি হলে বুঝতে হবে ,এই প্রোডাক্টের এফিলিয়েটের সংখ্যা বেশি, তাই প্রতিযোগিতা বেশি হবে।
  • বড় ব্র্যান্ড গুলো ইতিমধ্যে এই প্রোডাক্ট প্রমোট করছে কি না?
    • গুগল সার্চ করে দেখে নিন, বড় কোনো ব্র্যান্ড একই প্রোডাক্ট প্রমোট করছে কি না। অতিরিক্ত প্রতিযোগিতা এড়াতে এধরনের প্রোডাক্ট প্রমোট করা থেকে বিরত থাকুন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কমিশন স্ট্রাকচারঃ

এফিলিয়েট মার্কেটিং এ অর্থ উপার্জনের অনেকগুলো উপায় রয়েছে। প্রোডাক্ট প্রমোশনে নামার আগে উপায়গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিন, যাতে আপনি বুঝতে পারেন কোন ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ে আয় হবে আর কোন ক্ষেত্রে বারবার উপার্জনের সুযোগ রয়েছে।

প্রোডাক্টের ধরন ও মার্চেন্টের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির উপর নির্ভর করে আপনি কিভাবে পেমেন্ট পেতে যাচ্ছেন। কিছু সাধারন পেমেন্টের ধরন হলঃ

  • ওয়ান-টাইম কমিশনঃ
    • এটি সবচে জনপ্রিয় পদ্ধতি।প্রতিটি সেলের সাথেই আপনি কমিশন পাবেন। তবে প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য একবারই। কোনো রিকারিং বিলিং হবে না। আমাজন এফিলিয়েটস এই মডেলটি ফলো করে।
  • রিকারিং কমিশনঃ
    • ইন্টারনেট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে রিকারিং কমিশন অত্যন্ত লাভজনক। কারণ প্রতি মাসেই কমিশন পাওয়া যাবে এমন প্রোডাক্টগুলোর ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি।
    • এক্ষেত্রে রিকারিং কমিশনের অর্থ হল একই কাস্টোমার একই প্রডাক্ট বার বার কিনলেও আপনি বারবার কমিশন পাচ্ছেন। সাবস্ক্রিপশন-বেইজড প্রোডাক্ট বা সফটওয়্যার সার্ভিসের ক্ষেত্রে সাধারনত রিকারিং কমিশনের ব্যবস্থা থাকে।
    • উদাহরণস্বরূপ, AWeber এর কথা বলা যায়। এ কোম্পানিটি এফিলিয়েটদের রিকারিং কমিশন দিয়ে থাকে। যেহেতু কাস্টোমাররা প্রতিমাসে পেমেন্ট করে থাকে।
  • কস্ট পার ক্লিক (সিপিএ)
    • এটি যারা নতুন এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করছে তাদের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক। কারণ এক্ষেত্রে সেল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ না। বরং লিড জেনারেট করাটাই মূল কাজ।
    • যখন কোনো কাস্টোমার মার্চেন্টের নির্ধারিত কোনো কাজ সম্পাদন করবে যেমন ইমেইল এড্রেস দেওয়া বা কোনো ফর্ম পূরন করা বা কোনো ফাইল ডাউনলোড করা, তখনই আপনি কমিশন পাবেন।
    • Peerfly একটি জনপ্রিয় সিপিএ নেটওয়ার্ক। যদিও সিপিএর ক্ষেত্রে কমিশনের হার কম, তবুও নতুনদের জন্য এটি সুবিধাজনক, কারন কাউকে কোনো কিছু কেনাতে কনভিন্স করানো থেকে শুধু ফরম পূরন করতে কনভিন্স করা অনেক সহজ।

সেকশন ৪. এফিলিয়েট প্রডাক্ট প্রমোশন এবং বিক্রয়ের গাইডলাইন

এতক্ষনে যেহেতু আমরা এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এবং এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক সিলেক্ট করা শিখতে পেরেছি, চলুন এখন প্রোডাক্ট সেলের বিষয়ে আলোচনা করা যাক।

শুরুর দিকে বেশির ভাগ মানুষ এই পর্যায়েই সমস্যায় পড়ে।কারণ আপনি একজন সফল ব্যবসায়ী হতে চান, কিন্তু অতিমাত্রায় বিক্রি করতে আগ্রহী এমন সেলসম্যান হতে চান না। আপনি হয়তো প্রোডাক্ট প্রমোশন সম্পর্কে এখনও খুব বেশি কিছু জানেন না, আপনার এ সম্পর্কে বড় কোনো ডিগ্রিও নেই। তবে চিন্তা করবেন না, আপনি এগুলো ছাড়াই এফিলিয়েট মার্কেটিং এ সফল হতে পারবেন।

আমি আপনাকে বুঝিয়ে বলব কীভাবে আপনি আকর্ষণীয় কন্টেন্ট আর সেলস অফারের মধ্যে সঠিক ব্যালেন্স রেখে প্রমোশন করতে পারেন, যাতে আপনার সেলও হয় আবার অডিয়েন্সরাও হেল্পফুল কন্টেন্ট পেতে পারে। এই উপায় ব্যবহার করে অনেক সফল এফিলিয়েট ব্যবসা এখন দাঁড়িয়ে আছে, তাই সঠিক ভাবে বুঝতে পারলে আপনিও পারবেন।

আপনি ক্লিকব্যাংক থেকে কিভাবে একটি লিংক নিয়ে প্রোডাক্ট প্রমোশন আর সেল করতে পারেন, তা একটি উদাহরণের সাহায্যে বুঝিয়ে বলছিঃ

  • প্রথমে আপনার ক্লিকব্যাংক একাউন্টে লগইন করুন এবং মার্কেটপ্লেসে যান। মারকেটপ্লেসে নানা ধরনের এফিলিয়েট প্রোডাক্ট আপনি দেখতে পাবেন। এর মধ্যে থেকে আপনার পছন্দসই ক্যাটাগরিতে যান আর এমন একটি প্রোডাক্ট সিলেক্ট করুন যা আপনি প্রমোট করতে চান। প্রোডাক্ট পছন্দ করার পর প্রমোট অপশনে ক্লিক করুন। এরপর ক্রিয়েট অপশনে ক্লিক করুন। এরপর একটি ট্র্যাকিং আইডি এন্টার করুন যা দিয়ে আপনি এই এফিলিয়েট লিংকটির জন্য কতগুলো ক্লিক হচ্ছে তা ট্র্যাক করতে পারবেন।
  • এরপর লিংকটি কপি করুন। এটিই আপনার এফিলিয়েট লিংক। আপনি প্রোডাক্টটি যখনই প্রমোট করতে যাবেন, আপনার এই লিংকটি কাজে লাগবে। তাই সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়, এমন কোথাও লিংকটি সেইভ করে রাখুন।
  • ট্র্যাকিং আইডি ব্যবহার করে আপনি চাইলে একই প্রোডাক্টের জন্য একের বেশি লিংক তৈরী করতে পারেন।এর সাহায্যে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার কোন প্রমোশনাল মেথডটি সবচে বেশি কার্যকর, অর্থাৎ কোন লিংকটি বেশি ক্লিক এনে দিচ্ছে।
  • যখন আপনি একের বেশি প্রোডাক্ট প্রমোশন শুরু করবেন আপনার কাছে অনেক লিংক আর ট্র্যাকিং আইডি হয়ে যাবে, তাই প্রথম থেকেই একটি টেক্সট না স্প্রেডশীটে আপনার লিংক, ট্র্যাকিং আইডি এবং কোথায় কোনটি কীভাবে ব্যবহার করছেন তার হিসাব রাখুন।

এখন যেহেতু এফিলিয়েট লিংক তৈরী হয়ে গেছে, চলুন এবার প্রোডাক্টটি সেলের ব্যাপারে কথা বলা যাক।

আপনার যদি আগে থেকেই কোনো ব্লগ থেকে থাকে যেখানে আপনার অডিয়েন্স আছে, তাহলে আপনি অনেকটা এগিয়ে আছেন। এখন চাইলেই যেকোনো দিন আপনার কন্টেন্টের সাথে প্রোডাক্ট রিভিউ যোগ করতে পারেন। এখন আপনাকে এমন প্রোডাক্ট রিভিউ লিখা শিখতে হবে যা একই সাথে তথ্যবহুল, কার্যকর এবং অডিয়েন্সকে প্রোডাক্টটি কিনতে আগ্রহী করে তোলে।

এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার পাঠকদের প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রাখবেন, কিন্তু তাদেরকে প্রোডাক্টটি কিনতে বলতে কুন্ঠা বোধ করবেন না। কারণ আপনি অবশ্যই প্রোডাক্টটির কার্যকারিতা জেনেই সেটা তাদের কাছে প্রমোট করছেন, তাই কনফিডেন্ট থাকুন।

ব্যবসার ক্ষেত্রে সততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই পাঠকদের জানিয়ে দিতে পারেন যে, এই প্রমোশন থেকে আপনি সামান্য কমিশন পাচ্ছেন।

এছাড়া আরেকটি অপশন হচ্ছে আপনি ডিরেক্টলি সাইডবার বা ব্যানার হিসেবে একটি এড ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে এডটি আপনার ওয়েবসাইটের লুকের সাথে যাচ্ছে কিনা তা খেয়াল রাখুন।

আপনার যদি ইনভেস্ট করার জন্য ভালো বাজেট থাকে, তাহলে Google AdWords, ফেইসবুক বা অন্যান্য পেইড সার্ভিস দিয়ে এডভারটাইজ করা শুরু করতে পারেন। এসব মেথড ছাড়াও আপনি সরাসরি আপনার টার্গেট কাস্টোমারদের ইমেইল করতে পারেন। এটি হচ্ছে আপনার প্রোডাক্টটি প্রমোট করার জন্য সবচে ভালো উপায় যা লং টার্মে আপনার কাজে দিবে।

এখন আমরা ইমেইল দিয়ে কি করে প্রোডাক্ট প্রমোশন করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করব।

এফিলিয়েট সেলের জন্য ইমেইল মার্কেটিং

আজকালকার দিনে নতুন সব মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির ব্যস্ততায় বুঁদ হয়ে অনেকেই ডিরেক্ট টার্গেট কাস্টোমারদের ইমেইল করার টেকনিকটা বাদ দিয়ে যায়।কিন্তু এর মতো সিম্পল কিন্তু কার্যকর মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি কমই আছে।

আপনি যদি ইন্টারনেট, রেডিও, টিভি বা প্রিন্ট মিডিয়ায় এড প্রচার করেন, আপনার টার্গেট অডিয়েন্স এডটা দেখতেও পারে আবার নাও দেখতে পারে। কিন্তু তাদেরকে সরাসরি ইমেইল করলে অবশ্যই তারা দেখবেন।

ইমেইল মার্কেটিং সফলভাবে পরিচালনার কিছু টিপসঃ

  • আপনার আদর্শ কাস্টোমারদের খুঁজে বের করুন,
  • তাদের ইমেইল এড্রেসের বদলে তাদেরকে কিছু সুবিধা দিন,
  • তাদেরকে রেগুলার আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্ট সম্পর্কে দারুণ সব অফার পাঠান,

ইমেইল মার্কেটিং সফলভাবে কাজ করার কিছু কারণ আছে। যেমনঃ

  • আপনি কাস্টোমারের সাথে দীর্ঘ সময় যোগাযোগ করছেন, এর ফলে একটি লংটার্ম প্রফিটেবল সম্পর্ক তৈরী হয়।
  • শুধুমাত্র আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স যারা, অর্থাৎ যারা এই প্রোডাক্টের প্রতি আগ্রহী তারাই মেসেজ পাচ্ছেন।
  • কাস্টোমাররা চাইলে আপনাকে ডিরেক্ট ফিডব্যাক দিতে পারে, কোনো সমস্যা হলে আপনি সহজে তা সমাধানের ব্যবস্থা করতে পারবেন,
  • আপনার প্রথম অফারে যদি তারা প্রোডাক্ট কিনতে না চায়, আপনি পরবর্তীতে অন্য অফার পাঠাতে পারে।
আপনার ইমেইল লিস্টটি যেভাবে তৈরী করবেন

একটি ভালো মানের ইমেইল লিস্ট পেতে কোনো ইমেইল লিস্ট প্রোভাইডারের সার্ভিস নিতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে একটি সাইন-আপ বক্স প্লেস করুন। এজন্য আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে Converkit এর সার্ভিস রেকমেন্ড করব। Converkit এর সাহায্যে আপনার ওয়েবসাইটে অপ্ট-ইন বক্স তৈরী করতে পারেন। এছাড়া ফ্রি ইমেইল কোর্স সেট আপ করা, সাবস্ক্রাইবারদের বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা, তাদের অটোমেটেড ইমেইল পাঠানো এধরনের কাজের ক্ষেত্রেও Converkit এর জুরি নেই।

আপনার প্রথম অফারঃ লিড ম্যাগনেট

আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটররা এমনি এমনি আপনাকে তাদের ইমাইল এড্রেস দিয়ে দিবে না, এজন্য আপনার তাদেরকে কোনো লোভনীয় অফার দিতে হবে, যাতে তারা নিজেদের ইমেইল এড্রেসটি আপনাকে দেয়। এই লোভনীয় অফারগুলোকেই আমরা বলে থাকি লিড ম্যাগনেট।

আপনার লিড ম্যাগনেটটি থেকে যদি সাবস্ক্রাইবাররা ভালো সুবিধা পায়, তারা অবশ্যই আপনার ইমেইল আগ্রহের সাথে পড়বে। এভাবে যখন সাবস্ক্রাইবারদের সাথে আপনার সুসম্পর্ক তৈরী হবে, তারা আপনার প্রোডাক্ট অফারিংও মনোযোগ দিয়ে পড়বে এবং বিশ্বাস করে প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হবে।

আপনার সুবিধার জন্য কিছু ভালো লিড ম্যাগনেটের উদাহরণ দেওয়া হলঃ

  • কুইজ বা এসাইনমেন্ট
  • চেকলিস্ট বা গাইড
  • ফ্রি ট্রায়াল (সাইট বা সার্ভিসের ক্ষেত্রে)
  • ডিস্কাউন্ট কোড বা ফ্রি শিপিং (ফিজিকাল প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে)

লিড ম্যাগনেট আর সাইন-আপ পেইজ তৈরী করতে নিচের গাইডলাইন ফলো করতে পারেনঃ

  • আপনার অপ্ট-ইন পেইজের জন্য লিড ম্যাগনেটের আইডিয়া খুঁজে বের করুন
  • ফেইসবুকের সাহায্য নিয়ে পেইজ তৈরী করুন
  • অপ্ট-ইন রেট বাড়িয়ে দিন

আপনার লিড ম্যাগনেটে কিভাবে ট্রাফিক বাড়াবেনঃ

ট্রাফিক বৃদ্ধি করার নানা উপায় রয়েছে। সবচে কার্যকর দুইটি উপায় বর্ণনা করছিঃ

১. পে পার ক্লিক। ২. কন্টেন্ট মার্কেটিং।

১. পে পার ক্লিকঃ

  • ফেইসবুক, এডওয়ার্ড আর বিং-এ সহজেই পেইড ট্রাফিক পাওয়া যায়। তবে আপনাকে তার জন্য কিছু খরচ করতে হবে।
  • এজন্য শুরুতে অল্প ইনভেস্ট করে দেখতে পারেন, এর থেকে আপনার লিড ম্যাগনেটে কেমন সাইন-আপ পাচ্ছেন। যতজন আপনার লিংকে ক্লিক করছে তারমধ্যে কতজন সাইন-আপ করছে সেটা হিসাব রাখুন, এটাই আপনার কনভার্সন রেট।
  • এরপর হিসাব করুন যারা সাইন আপ করল তার মধ্যে ঠিক কতজন শেষ পর্যন্ত প্রোডাক্টটি কিনল।

পে পার ক্লিক দিয়ে ট্রাফিককে ওয়েবসাইটে কিভাবে আনা যায় তা একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বলছিঃ

  • ধরুন ১০০ জন মানুষ আপনার দেওয়া ফেইসবুক এডটি দেখল এবং ক্লিক করল।
  • এরমধ্যে ৩৫ জন লিড ম্যাগনেটে সাইন আপ করল আর আপনার লিস্টে জয়েন করল।
  • এরমধ্যে ৫জন শেষ পর্যন্ত এফিলিইয়েট প্রোডাক্টটি কিনল।
  • প্রতিটি সেলের জন্য যদি আপনি ১ হাজার করে কমিশন পান তাহলে আপনার মোট কমিশন হবে ৫হাজার টাকা।
  • তাহলে দেখা যাচ্ছে যে ফেইসবুক এডটিতে প্রতি ১০০ ক্লিকের জন্য আপনি ৫ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন।
  • তাহলে আপনার একটা ধারণা হচ্ছে কোন এডে কত খরচ করলে আপনার কিরকম লাভ হচ্ছে। বিভিন্ন এড আর লিংক দিয়ে এবার এক্সপেরিমেন্ট করে দেখুন কোন ক্ষেত্রে আপনার কনভার্সন রেট সর্বাধিক।

২. কন্টেন্ট মার্কেটিং

  • আপনার ব্লগে আর্টিকেল, রিভিউ, গাইড ইত্যাদি পোস্ট করেও আপনি ট্রাফিক জেনারেট করতে পারেন। এই মেথডের অসংখ্য সুবিধা রয়েছে। প্রথম কথা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণ ফ্রি।
  • আপনি সহজেই তথ্যবহুল দারুণ সব আর্টিকেল লিখে আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তা বাড়াতে পারেন। আর আপনার ব্লগের আর্টিকেলগুলো যদি হেল্পফুল হয় পাঠকদের সাথে আপনার একটি বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরী হবে। এরফলে আপনার কনভার্সন রেটও বাড়বে।
  • যদিও কন্টেন্ট মার্কেটিং এর অসাধারণ একটি পদ্ধতি কিন্তু এটি দিয়ে ট্রাফিক জেনারেট করতে বেশ সময় লাগে। কন্টেন্ট মার্কেটিং সফলভাবে করতে আপনাকে SEO (Search Engine Optimization) বেশ ভালো ভাবে রপ্ত করতে হবে। বিশেষত On-Page-SEO এবং SEO Article Writing এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
  • এছাড়াও আপনি ব্যাকলিংক মেথড ব্যবহার করে আপনার ব্লগটি গুগলের ফার্স্ট পেইজে র‍্যাংক করাতে পারেন।
  • আপনি যদি সঠিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করেন আর ভালো কন্টেন্ট পোস্ট করেন তাহলেই বেশি ট্র্যাফিক পাবেন।
  • মোট কথা হচ্ছে, আপনার আর্টিকেলগুলো যত হেল্পফুল আর রিলিভ্যান্ট হবে, ততই সেগুলো মানুষ শেয়ার করবে, আর সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ব্লগটা সহজে পরিচিতি পাবে। যার ফলাফল আপনি দেখতে পাবেন আপনার কনভার্সন রেটে, অর্থাৎ আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্টের বিক্রিও ততই বাড়তে থাকবে।

আপনার ইমেইল লিস্টের অডিয়েন্সদের কি ইমেইল পাঠাবেন?

আমরা আগেই আলোচনা করেছি ইমেইল ফানেল কীভাবে আপনার আয় বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে এজন্য আপনি লিস্টের মানুষদের কি ইমেইল পাঠাবেন, কবে কবে পাঠাবেন আপনার ইমেইল গুলোতে সেলস অফার থাকবে কি না সেগুলো আগে চিন্তা করে আপনার স্ট্র্যাটেজিটা ঠিক করে নিন।

প্রথমেই অফার না পাঠিয়ে আগে অডিয়েন্সদের যাতে আপনার উপর আস্থা তৈরী হয় সেজন্য তাদের কাছে অন্য হেল্পফুল ইমেইল পাঠান, একটি সম্পর্ক গড়ে তুলুন।

আপনি কতগুলো মেসেজ পাঠাচ্ছেন এবং ইমেইল গুলোর কতটিতে প্রোডাক্টের অফার পাঠাচ্ছেন তার মধ্যে একটি ব্যালেন্স রক্ষা করবেন। প্রথমেই বেশি ভাবতে যাবেন না, যদি কেউ আনসাবস্ক্রাইবও করে দেয় এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। এর থেকে আপনি নতুন একটা শিক্ষা পেলেন।

কিভাবে কাজটি শুরু করবেন তার একটি আইডিয়া নিচে দেওয়া হলঃ

  • আপনার ব্লগের নতুন আর্টিকেলগুলো ইমেইলে পাঠিয়ে দিতে পারেন,
  • আপনার প্রোডাক্টটি সম্পর্কে নিজস্ব অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন,
  • ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন দরকারি লিংক পাঠাতে পারেন,
  • প্রোডাক্ট রিভিউ পাঠান,
  • বর্তমান সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা যদি আপনার প্রোডাক্টের সাথে কোনোভাবে সম্পর্কিত হয়, সেগুলোও পাঠাতে পারেন।

সবসময় আপনার অডিয়েন্সরা কি ধরনের ইমেইল পেয়ে উপকৃত হবে, তা চিন্তা করুন, তারা কী ধরনের প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী সেটা চিন্তা করুন। এগুলোই সফল এফিলিয়েট মার্কেটিং এর চাবিকাঠি।

এখন যেহেতু আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং কী, কিভাবে শুরু করবেন, কিভাবে সেল পাবেন এসব সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা পেয়েছেন, এবার এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ট্যুল গুলো সম্পর্কে জেনে নিন।

সেকশন ৫. এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ট্যুলস

কিছু জনপ্রিয় এফিলিয়েট মার্কেটিং ট্যুলস নীচে আলোচনা করা হলঃ

  • অফার ভল্ট
    • অফার ভল্ট থেকে খুব সহজেই আপনার জন্য সুবিধাজনক এফিলিয়েট নেটওয়ার্কটি খুঁজে বের করতে পারেন। আপনার প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে অফার ভল্টে এফিলিয়েট নেটওয়ার্কগুলো সাজানো রয়েছে। আপনি চাইলেই সার্চবার থেকে আপনার জন্য যেটা প্রযোজ্য সেটা খুঁজে পেতে পারেন। সার্চবারে আপনার প্রোডাক্ট আইডিয়াটি দিন, তাহলে দেখবেন এর সাথে সম্পর্কিত এফিলিয়েট নেটওয়ার্কগুলো পেয়ে যাচ্ছেন।
  • অপ্টইনমন্সটার
    • অপ্টইনমন্সটারের সাহায্যে অতি সহজেই আপনি হাই-কনভারটিং অপ্ট-ইন পেইজ তৈরী করতে পারেন। এটি দিয়ে একটি পারফেক্ট ল্যান্ডিং পেইজ তৈরী করুন যাতে আপনার লিড ম্যাগনেটে সর্বোচ্চ সাবস্ক্রাইবার পেতে পারেন।
  • থার্স্টি এফিলিয়েটস
    • থার্স্টি এফিলিয়েটস হল ওয়ার্ডপ্রেসের একটি এফিলিয়েট লিংক ম্যানেজমেন্ট প্লাটফর্ম। এই প্লাটফর্মটি বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদান করে। যেমন ক্লোকিং লিংক, ট্র্যাকিং, অটো কিওয়ার্ড লিংকিং ইত্যাদি।
  • ভিগলিংক
    • এর সাহায্যে আপনি চাইলে আপনার ইতিমধ্যে তৈরী করা কন্টেন্টের সাথে নতুন এফিলিয়েট লিংক যোগ করতে পারেন।

সেকশন ৬. এফিলিয়েট মার্কেটিং বিষয়ে আরো প্রশ্নোত্তর

এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় কিছু প্রশ্নের জবাব নীচে উল্লেখ করা হল।

  • এফিলিয়েট হওয়ার জন্য কি নিজের ওয়েবসাইটের প্রয়োজন আছে?
    • নিজের ওয়েবসাইট থাকতেই হবে এমন কোনো কথা নেই, তবে থাকলে আপনারই সুবিধা। আর আপনার ব্যবসার সিকিউরিটির জন্যও এটা দরকারি।
    • তাই একটি সিম্পল ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরী করে রাখুন।
    • আমি আপনাকে ভালো ওয়েবসাইট তৈরির জন্য সাজেস্ট করব Studiopress। এটি WordPress এর প্লাটফর্মে ওয়েবসাইট তৈরী করে এবং আপনার সাইটের সিকিউরিটি, আপডেট ও ডিজাইনে সহায়তা করে।
    • নিজের একটি ওয়েবসাইট থাকার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনি এর থেকে আপনার কাস্টোমারদের একটি ইমেইল লিস্ট তৈরী করতে পারবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে এই ইমেইল লিস্ট একটি বড় সম্পদ।
    • এছাড়া নিজের ওয়েবসাইট থাকার আরেকটি ভালো বিষয় হলো আপনি কন্টেন্ট মার্কেটিং এর সুযোগ পাবেন, এটি লিড জেনারেশনের একটি বড় সুযোগ তৈরী করে।
    • আজকাল অনেক ব্যবসাই শুধুমাত্র ফেইসবুক পেইজ বা ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট থেকে করা হয়ে থাকে। যদিও এগুলো ওয়েব ট্রাফিককে আপনার ওয়েবসাইটে আনতে বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু নিজের ওয়েবসাইট থাকলে আপনার শুধু মাত্র সোশাল মিডিয়ার উপর নির্ভর করে থাকতে হবে না।
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে কত টাকা প্রয়োজন?
    • শুরু করতে আসলে কোনো টাকা প্রয়োজন নেই। আপনি বিভিন্ন ফ্রি মার্কেটিং মেথড যেমন সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং বা বিভিন্ন ফোরামে পোস্ট করা এসব উপায়েই আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্টের প্রমোশন শুরু করতে পারেন।
    • আপনি ওয়েবসাইট তৈরী করতে কিছু টাকা খরচ করতে পারেন অথবা নিজেই কোনো ফ্রি ওয়েব সাইট সেট আপ করতে পারেন।
      আপনি যদি ফেসবুক এড দিয়ে এফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করতে চান সেখানেও কিছু টাকা খরচ হবে। আপনি ফ্রি আর পেইড দুই ধরনের সার্ভিস মিলিয়ে আপনার জন্য যেটা সবচে লাভজনক মনে হয় তেমন একটা স্ট্র্যাটেজি ঠিক করুন।
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আমি প্রতি মাসে কত আয় করতে পারব?
    • এর আসলে সঠিক কোনো উত্তর নেই। কেউ ১০হাজারও আয় করতে পারে, আবার কেউ এক লাখও আয় করতে পারে। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সৌন্দর্য এখানেই, কোনো বাঁধা-ধরা লিমিট এখানে নেই। তবে আপনাকে অবশ্যই ধীরে ধীরে কাজটি ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। কোন টেকনিকগুলো বেশি কনভার্সন রেট এনে দিচ্ছে তা বুঝতে পারলেই আপনি দ্রুত এক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করবেন।
    • আপনি যদি ধৈর্যের সাথে নিয়মিত কাজ করে যান, তাহলে কয়েক মাসেই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জগতে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারবেন।
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কি পূর্বের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে?
    • নাহ, যে কেউ এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারে, এজন্য আগে থেকে কোনো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই।
  • কত দিনের মধ্যে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন শুরু করা সম্ভব?
    • এই গাইডটি ফলো করলে এক সপ্তাহের ভিতরেই উপার্জন শুরু করতে পারবেন আশা করি। একটি কথা মনে রাখতে হবে, আপনি যদি দীর্ঘ সময় ধরে কাজটিতে টিকে থাকতে পারেন, তাহলেই আপনি প্রকৃতপক্ষে সফল হবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করা বেশ বড় একটি কাজ। প্রোডাক্ট সিলেকশন, রিসার্চ, ইমেইল মার্কেটিং এসব কাজে যথেষ্ঠ ধৈর্যের প্রয়োজন আছে। একেবারে সব করতে গিয়ে হাল ছেড়ে দিলে হবে না। ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার সাথে প্রতিটি ধাপ একে একে পার করতে হবে।

যতদিন না আপনি সেল করতে পারছেন, শুরুর দিনের মতোই একই উদ্যোমের সাথে প্রতিটা স্টেপ আপনাকে করে যেতে হবে। এরপর যখন আপনি কমিশনের চেক পেতে থাকবেন, সেগুলোই আপনাকে আরো সামনে এগিয়ে চলার প্রেরণা যোগাবে।