আপনার ফ্রিল্যান্সিং কভার লেটারটি যুতসই হওয়া প্রয়োজন। কারণ এটির উপরেই নির্ভর করছে আপনি আপনার এপ্লাই করা ফ্রিল্যান্স জবটি পাচ্ছেন কি পাচ্ছেন না।  

আপনি যদি ফ্রিল্যান্সার হন, তবে আপনার কাজ সম্পর্কে সবচেয়ে স্পেসিফিকভাবে ক্লায়েন্ট আপনাকে জানবে আপনার কভার লেটারের মাধ্যমে। 

প্রথাগত জব কভার লেটারের চেয়ে ফ্রিল্যান্সিং কভার লেটার কিছুটা আলাদা। আপনি এই ব্লগে ফ্রিল্যান্সিং যবে এপ্লাই করার জন্য কভার লেটারটি কিভাবে লিখতে  কিছু আইডিয়া  চেষ্টা করেছি।  চলুন সেগুলো এক এক করে দেখা যাক –

  • গ্রীটিংস / সম্ভাষণ:
    • অন্যের কাছে নিজেকে পরিচিত করার সময় যথাসম্ভব নম্রভাবে কথা বলুন। 
    • আপনি যেহেতু আপনার নতুন ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন তাইলে আপনি প্রথম দিকে কিন্তু ক্লায়েন্টকে চিনেন না। আপনার গ্রীটিংসও কিন্তু সেইভাবে হওয়া প্রয়োজন।
    • ক্লায়েন্টকে পারফেক্টভাবে সম্ভাষণ জানিয়ে আপনার কাজ সম্পর্কে দু’চার কথায় পরিচয় দিন।
  • সংক্ষিপ্তকরণ: 
    • আপনার ফ্রিল্যান্সিং কভার লেটারটি যতসম্ভব সংক্ষিপ্ত রাকার চেষ্টা করুন।
    • কোন ফ্রিল্যান্সারের কাছে তার কভার লেটার তার ওয়ার্ক এক্সপিরিয়েন্স বিস্তারিত বর্ননা করার জায়গা নয়। 
    • ক্লায়েন্টের কিন্তু এত সময় নেই যে আপনার ফুল ওয়ার্ক এক্সপিরিয়েন্স উনি ইন ডিটেইলস দেখবেন। 
    • তাই অতি সংক্ষিপ্ত ভাবে আপনার কাজের মূল বিষয়টি কভার লেটারে লিখবেন।
    • এতেই আপনার কাজ পাওয়ার পসিবিলিটি বেড়ে যাবে। 
  • স্পেসিফিক ফিল্ড:
    • স্পেসিফিক ফিল্ড এ আপনার ফোকাস থাকায় ভাল হবে আপনার জন্য।
    • ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি বিভিন্ন ফিল্ডে ট্যালেন্টড হতেই পারেন। তাই বলে সবকিছু কভার লেটারে উল্লেখ করতে যাবেন না। 
    • আপনার কভার লেটারে স্পেসিফিক কোন ক্ষেত্রে আপনি দক্ষ তা লিখুন।
    • এতে ক্লায়েন্ট আপনার কাজ সম্পর্কে একটি ভালো আইডিয়া পাবেন ও আপনার সাথে তার প্রজেক্ট ডিসকাস করতে চাইবেন।
  • অতি উৎসাহী:
    • অতি উৎসাহী মনোভাব নিজের মধ্যে না রাখাই ভালো হবে। 
    • আপনার মনে রাখতে হবে আপনি কম্পিটিশন করছেন গ্লোবাল সব ফ্রিল্যান্সারদের সাথে।
    • কভার লেটারে ক্লায়েন্টের কাছে নিজেকে উৎসাহী দেখালেও মাথায় রাখবেন তা যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায়। 
    • আত্মবিশ্বাসী হোন, নিজের বিশেষত্ত্বকে তুলে ধরুন নিজের সীমার মধ্যেই।
    • এতে ক্লায়েন্ট আপনার কাজের পরিধি সম্পর্কে ভালো আইডিয়া পাবেন এবং এটি আপনার জন্য একটি পসিটিভ সাইড ও হতে পারে।  
  • বিশ্বাসযোগ্যতা:
    • সব বিজনেসের ক্ষত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা বিশাল একটি ফেক্টর। 
    • আপনি ক্লায়েন্টের কাছে নিজেকে যত বিশ্বাসযোগ্য হিসাবে তুলে ধরতে পারবেন ততই আপনি অন্য ফ্রিল্যান্সারদের থেকে এগিয়ে থাকবেন। 
    • অসংখ্য ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে থেকে আপনাকে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে হলে বড় বড় ক্লায়েন্টদের সঙ্গে বিশ্বাসযোগ্যতা ও কাজের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। 
    • সেই সব কাজের অভিজ্ঞতা আপনার কভার লেটারে লিখুন যেগুলো ক্লায়েন্ট এর পছন্দ হতে পারে।
  • সঠিক ফরম্যাট: 
    • সঠিক ফরম্যাট এ আপনার কভার লেটারটি লিখার চেষ্টা করুন।
    • মনে রাখবেন কোন জবের জন্য একজন ক্লায়েন্টের কাছে বহু কভার লেটার জমা পড়ে। 
    • এই এত ভিড় থেকে নিজেকে বিশেষ করে তুলতে আপনার কভার লেটারের ফরম্যাটে এমন কিছু বদল আনুন, যাতে সেটি আকর্ষণীয় হয় সবার কাছে।
    • যতই আকর্ষনীয় ফরম্যাট এ আপনার কভার লেটারটি লিখতে পারবেন ততই ক্লায়েন্ট এর নজরে পরবেন।
  • নাম মেনশন:
    • ক্লায়েন্টের সঙ্গে পূর্বেই কাজ করা যে ব্যক্তির ধারা আপনি কাজটি পেতে চাইছেন, কভার লেটারে অবশ্যই তার নাম একবার মেনশন করুন। 
    • এই মিউচুয়াল রেকমেন্ডেশন খুব দরকার ফ্রিল্যান্সিংয়ে। এবং এটি ক্লায়েন্টকে আপনার প্রতি একটি পজিটিভ ফিল দিবে।  
  • ক্লায়েন্ট নির্দেশিকা:
    • প্রতিটি জব অফার ভালো করে পড়ে জেনে নিন কীভাবে সেখানে আবেদন করতে হবে। 
    • আপনি যদি ক্লায়েন্টের রিকুয়ারমেন্ট ফলো না করেন তাইলে ক্লায়েন্ট আপনার প্রপোজাল ডিক্লাইন করে দিবেন। 
    • প্রপোজাল ডিক্লাইন হয়ে গেল মানে আপনি আর ওই কাজের জন্য যোগ্যতা হারালেন।
    • ক্লায়েন্ট কাজের কোন স্পেসিফিক নমুনা চাইলে সঙ্গে সঙ্গে তা দিয়ে দিন।
  • আত্মবিশ্বাস: 
    • নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বা কনফিডেন্স আপনাকে অনেক উপরে নিয়ে যেতে পারে।
    • ক্লায়েন্ট কী ধরণের কাজ চাইছেন তা  আগে থেকে জেনে নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কভার লেটারে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করুন।
    • আপনার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বা কনফিডেন্স আছে, তার মানে হল আপনাকে আর কেউ ঠেকাতে পারবে না। 
    • ক্লায়েন্ট ইন্টারভিউ নিতে চাইলে প্রস্তুত থাকুন তৎক্ষনাৎ। 
  • কাজ শেখা: 
    • আপনি যে সবসময় নিজেকে ইম্প্রোভ করতে সচেষ্ট এটি এক লাইনে ক্লায়েন্টকে বুঝিয়ে দিন।  
    • ক্লায়েন্ট বুজে নিবেন যে আপনি একজন পরিশ্রমী ব্যাক্তি। 
    • কভার লেটারকে আকর্ষণীয় করতে তাই আপনার দক্ষতার সঙ্গে কাজ শেখার ইচ্ছের কথা উল্লেখ করুন। 
    • দেখবেন ক্লায়েন্ট আপনাকে পজিটিভভাবে নিয়েছেন।
  • অনলাইন পোর্ট-ফোলিও:
    • একটি অনলাইন পোর্ট-ফোলিও আপনার থাকতেই হবে মাস্ট। 
    • কভার লেটারের শেষে আপনার অনলাইন পোর্ট-ফোলিওর লিংক দিয়ে দিন। 
    • ক্লায়েন্ট এতে সহজেই আপনার কাজ ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অবগত হবে।
    • যদি ক্লায়েন্ট এর কাছে আপনার পোর্টফোলিও পছন্দ হয় তাহলে আপনাকে ক্লায়েন্ট হাইয়ার ও করতে পারেন।
  • প্রুফরিড:
    • আপনার কভার লেটারটি সেন্ড করার আগে অবস্যই প্রুফরিডিং করে নিন।  
    • দেখে নিন সব ঠিক তথ্য পারফেক্টভাবে দিয়েছেন কিনা।  
    • প্রুফরিড করে সমস্ত বানান, বাক্য, তথ্য দেখে নিন। 
    • কোন ভুল দেখলে সাথে সাথেই সংশোধন করেন নিন। 

যদি আপনি এইসব কাজগুলো যথাযথ করতে পারেন, আশা করা যায় আপনার কভার লেটার যে কোন ক্লায়েন্টেরই পছন্দ হবে। এবং আপনি খুব শিগ্রই ফ্রিল্যান্সিং যবে ল্যান্ড করবেন